Logo

চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেও ডিম, মুরগি এবং সবজির বাজারে স্বস্তি

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে পুরান ঢাকার নয়াবাজার, শ্যামবাজার, রায় সাহেব বাজারসহ কয়েকটি বড় বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ফাইল ছবি

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: সাম্প্রতিক রাজধানীর বাজারগুলোতে চালের দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে চালের দাম প্রতি কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে স্বস্তির খবর হলো, কমেছে ডিম ও মুরগির দাম, সবজির বাজারও রয়েছে তুলনামূলক স্থিতিশীল।

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে পুরান ঢাকার নয়াবাজার, শ্যামবাজার, রায় সাহেব বাজারসহ কয়েকটি বড় বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের আগের তুলনায় বর্তমানে খুচরায় মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা প্রতি কেজিতে। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৭৮ টাকা, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে।

পুরান ঢাকার নয়াবাজারের এক পাইকারি চাল ব্যবসায়ী জানান, ঈদের পর থেকে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘মিল মালিকদের দাবি অনুযায়ী, ধানের দাম বৃদ্ধির ফলে চালের দাম বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে তা আরও বাড়তে পারে।’

অলিগলির ছোট মুদি দোকানগুলোতে চালের দাম কিছুটা বেশি দেখা গেছে। বংশাল এলাকার মুদি দোকানদার মজিদ মিয়া বলেন, ‘এই ধরনের দোকানে বাকির পরিমাণ বেশি। আমাদের বেশি ইনভেস্ট করতে হয়, তাই কিছুটা বাড়তি দামে চাল বিক্রি করি।’

চালের উচ্চমূল্য ক্রেতাদের মাঝে অস্বস্তি সৃষ্টি করলেও মুরগি, ডিম ও সবজির দাম কিছুটা কমে ক্রেতাদের স্বস্তি দিয়েছে। মুদি পণ্যগুলোর দামেও তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়নি। পেঁয়াজ, আলু ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীও কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

এক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে ঈদের আগে তা ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। ডিমের দামও কমে প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় এসেছে। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম এবং চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় দাম কমেছে।

বাজারে আগত বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানির ঈদের পর অনেক ঘরেই এখনও মাংস রয়েছে। ফলে ডিম ও মুরগির চাহিদা কম। তবে তাঁরা আশঙ্কা করছেন, কিছু দিন পর চাহিদা বাড়লে মুরগির দাম আবারও বেড়ে যেতে পারে।

পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার ও নয়াবাজারে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমেছে—বর্তমানে তা প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজারে উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি; বড় ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম তুলনামূলক বেশি।

নাবিলা আক্তার সেতু নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘সবসময়ই ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকার কাছাকাছি থাকে। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য সেটি অনেক বেশি। আজকে বাজারে এসে দাম শুনে ভালো লাগছে। যদি সবসময় এমন দাম থাকতো, তাহলে কিছুটা স্বস্তি পেতাম।’

সবজির বাজারেও দেখা গেছে ইতিবাচক প্রবণতা। পুঁইশাক, বেগুন, পেঁপে, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গে ও মিষ্টি কুমড়ার মতো সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যেই বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে এসব সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা বেশি ছিল। বড় বাজারের তুলনায় ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে দাম আরও কিছুটা কম।

সবজি বিক্রেতা মতিন মিয়া বলেন, ‘ঈদের আগেও সবজির দাম অনেক বেশি ছিল। এখন অনেকটাই কমে গেছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় সব সবজির দামই কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।’

বাংলাফ্লো/এনআর

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0