বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অধ্যক্ষ কর্তৃক ছাত্রীদের আপত্তিকর মেসেজের অভিযোগ, কলেজ গেটে ঝুলছে স্ক্রিনশট

সকালে কলেজ গেটের সামনে বিক্ষোভ করে এবং অধ্যক্ষের পাঠানো মেসেজগুলোর স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে দেয়।

ছবি: সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

নওগাঁ: নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানো এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কলেজ গেটের সামনে বিক্ষোভ করে এবং অধ্যক্ষের পাঠানো মেসেজগুলোর স্ক্রিনশট ঝুলিয়ে দেয়।

সকাল ১১টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে তারা চার দফা দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে অধ্যক্ষ সামসুল হকের পদত্যাগ, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এস এম মোজাফফর হোসেন এবং শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মনিরুজ্জামান বিদ্যুৎতের পদত্যাগ অন্যতম। শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি পূরণের আশ্বাস না মেলায় তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

এর আগে গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে সামসুল হক তার ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল। তিনি স্ক্রিনশট নিয়ে সবাইকে বিচলিত না হওয়ার অনুরোধ জানান। তবে স্ক্রিনশটগুলো ভাইরাল হওয়ার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ওঠে।

ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলোর একটিতে দেখা যায়, অধ্যক্ষ সামসুল হক এক শিক্ষার্থীকে লেখেন, আরো সুন্দর ছবি আছে তোমার। উত্তরে ছাত্রী বলেন, আর নেই স্যার। আমি সুন্দর না। আমার যা মনে হয়। তখন অধ্যক্ষ লেখেন, আছে আছে। ওড়না ছাড়া। শিক্ষার্থী তা অস্বীকার করলে তিনি বলেন, কলেজে দেখেছি তো। পরে তিনি বিদায় জানিয়ে লেখেন, ওকে। সামনেই দেখব। অনেক অনেক অনেক ভালো থেকো। বাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, দুই বছর আগে বিএমসি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ থাকাকালে তার সঙ্গে এমন কথোপকথন হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে ব্লক করলেও স্ক্রিনশট সংরক্ষণ করে রাখেন। আরেক ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ ফেসবুকে তাকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠিয়ে মাঝেমধ্যেই অশ্লীল মন্তব্য করতেন এবং কলেজে দেখা হলে অশোভন দৃষ্টিতে তাকাতেন।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন আমাদের পিতার সমতুল্য। সেই শিক্ষক যখন তার মেয়ের বয়সী একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে এ ধরনের কথা বলে এবং আবদার করে তখন সে আর শিক্ষক থাকতে পারে না। আমরা অবিলম্বে এই অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ সামসুল হক বলেন, স্ক্রিনশটের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। গুটিকয়েক শিক্ষার্থীকে কখনো প্রতিপক্ষ মনে করি না। যারা আমার বিষয়ে আন্দোলন করছে তাদেরকে আমি শিক্ষার্থী হিসেবেই দেখতে চাই।

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0