বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংস্কার না করা হলে পুরোনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে: প্রধান উপদেষ্টা

সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: সরকার একটি বৈধ নির্বাচন করতে চায়। যে নির্বাচন হবে গ্রামের মেলার মতো আনন্দদায়ক। গণ-অভ্যুত্থানের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও রাজনৈতিক সংস্কার না করা হলে, বাংলাদেশে পুনরায় পুরোনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে। গত বুধবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেলনিউজএশিয়া (সিএনএ) টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা জানিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন যদি বৈধ না হয়, তাহলে এর কোনো অর্থ নেই। আমার কাজ হলো এমন একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও আনন্দদায়ক নির্বাচন নিশ্চিত করা।

প্রধান উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেছেন, আমরা প্রায় আমাদের লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে গেছি। বহু বিষয় সংস্কার প্রয়োজন, কারণ যে রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল তা দুর্নীতিগ্রস্ত, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগে ভরা।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগস্টে শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে যান। তার অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে এবং তাকে ফেরত নেওয়ার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করা হলেও দিল্লি সাড়া দেয়নি। ইউনূস জানান, হাসিনা যেন বাংলাদেশ অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পান, সে বিষয়ে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা বলেছি, আপনারা তাকে রাখুন, আমাদের বিচার চলবে। কিন্তু তিনি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করার কোনো সুযোগ না পান।

শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আঞ্চলিক কূটনীতিতে ঢাকার অবস্থান কিছুটা বদলেছে। মার্চে ইউনূস বেইজিং সফর করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে, ভারতের সঙ্গেও আমরা ভালো সম্পর্ক চাই। এটা শুধু চীনের জন্য নয়—ভারত বা অন্য যে কেউ এর সুযোগ নিতে পারে।

৮৫ বছর বয়সী ইউনূস জানিয়েছেন, বিপ্লবের পর নেতৃত্ব গ্রহণের সময় তিনি প্রথমে রাজি ছিলেন না। তবে ছাত্রনেতা ও জনগণের অনুরোধে রাজি হন। তিনি বলেন, তারা আমাকে অনুরোধ করেছিল যে এত রক্ত ঝরেছে, এত আত্মত্যাগ হয়েছে, আর আপনি দেশের বাইরে জীবন উপভোগ করছেন, আপনি আমাদের সাহায্য করবেন না? এটা আমাকে খুব প্রভাবিত করেছিল, তাই আমি দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছিলাম।

তিনি নির্বাচন শেষে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও জানিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারের শেষ ভাগে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ আর পথভ্রষ্ট হবে না। যুবসমাজ ভোটের মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা ব্যালট বাক্সে তুলে দেবে। তিনি বলেন,আমি চাই, একটি ভালো সরকার আসুক এবং তা গণতান্ত্রিক নীতিমালা মেনে চলুক।

বাংলাফ্লো/সিএস


Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0