জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালী: গেল কিছুদিন ধরেই নগরজুড়ে চলছে বৃষ্টি। আর এই টানা বর্ষণে আবারও জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে নোয়াখালী জেলা শহর ও পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক ও আবাসিক এলাকা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে শহরের বিভিন্নস্থানে হাঁটুপরিমাণ পানি জমে থাকতে দেখা গেছে, যার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
পৌরবাসীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই নোয়াখালী শহর ডুবে যায়। জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ পেতে তারা দ্রুত কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ কামনা করছেন।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মাইজদীতে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। একটানা তিন ঘণ্টা ভারি বৃষ্টির পর থেমে থেমে আরও বৃষ্টি হলে শহরের প্রধান সড়কগুলো হাঁটু পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়।
জুলাই মাসজুড়েই এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
একাধিকবার টানা বৃষ্টির ফলে জেলার ৯টি উপজেলা ও পৌর এলাকাগুলোর অধিকাংশ সড়ক ও নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
আগের জমে থাকা পানি নামার আগেই নতুন বৃষ্টিপাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ফলে, অফিসগামী কর্মজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বিশেষ করে মাইজদীর স্টেডিয়াম এলাকা, ইসলামিয়া সড়ক, টাউন হল মোড়, পৌর বাজার সড়ক, জেলা আদালত চত্বর ও রেকর্ড রুম এলাকাসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে হাঁটুসমান পানি জমে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং খাল-জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণেই এই জলাবদ্ধতা বছরজুড়েই লেগে থাকে।
জেলা জজ আদালতে কাজ করতে আসা রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে জানান, একটু বৃষ্টি হলেই কোর্টের সামনের রাস্তায় পানি জমে যায়। দুপুরে তো হাঁটুসমান পানি ছিল। ড্রেন উপচে পড়ায় পানি কালো ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে গেছে। হেঁটে গেলে চর্মরোগ হতে পারে, অথচ রিকশাও পাওয়া যায় না।
একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ী মো. আলম হোসেন।
তিনি জানান, হাসপাতাল সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। কিন্তু এখন সেই সড়ক চলাচলের অনুপযোগী। দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে আগামী তিন থেকে চারদিন থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, আমরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি খাল দখলমুক্ত করেছি। খালের ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। জনস্বার্থে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বাংলাফ্লো/সিএস
Comments 0