বাংলাফ্লো প্রতিনিধি,
ঢাকা: জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে সংঘটিত ‘নির্মম হত্যাযজ্ঞের’ ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ রবিবার (৩ আগস্ট) সূচনা বক্তব্যের আগে তিনি বলেন, আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মত কোনো স্বৈরাচারের জন্ম হয়নি। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক। আদালতের কার্যক্রম ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোনো স্বৈরাচারকে মিথ্যার ওপর পিএইচডি করতে হলে শেখ হাসিনার কাছে শিখতে হবে। পৃথিবীর সব স্বৈরশাসকের যদি কোনো সমিতি করা হয়, শেখ হাসিনা হবেন তার সভাপতি। বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে স্বৈরাচার ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা চাই। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল পৃথিবীর কোনো স্বৈরাচারের কি পরিণতি হয়েছে, তা আদালতের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ের গুম–খুনের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে চাঁদাবাজি, টাকা পাচার আর হত্যা চলেছে। এরই বিরুদ্ধে ছিল বৈষম্যবিরোধী জুলাই আন্দোলন।‘
এই মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনার পাশাপাশি রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। মামুন বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন এবং তিনি রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেছেন, যা ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করেছে।
তিনি আদালতে বলেন, জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালীন আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। সেই সঙ্গে ৩ আগস্ট প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের দিন ধার্য করা হয়। মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে। এর আগে পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার চলছে।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0