আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঢাকা: ইসরায়েল সরকার গাজা উপত্যকায় এক নতুন ও ব্যাপক সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী পাঁচ মাসব্যাপী সেনা অভিযান চালিয়ে গাজার নতুন কিছু এলাকা দখল ও গাজা শহরের ১০ লাখ বাসিন্দাকে স্থানচ্যুত করা হবে। বুধবার (৬ আগস্ট ) এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সমর্থনে গৃহীত এই পরিকল্পনা বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট ) ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, পাঁচ আইডিএফ ডিভিশন নিয়ে এই অভিযান পরিচালিত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য বলেন, পরিকল্পনাটি সম্ভবত বৃহস্পতিবারই অনুমোদিত হবে। তবে মূল প্রশ্ন হলো, পরিকল্পনার কোন সংস্করণটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত হবে।
এদিকে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির এই অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি মনে করেন, এই পরিকল্পনা গাজায় আটক জিম্মিদের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। গত মঙ্গলবার এক বৈঠকে জামির বলেন, এই অভিযান একটি গুরুতর ভুল এবং এটা জিম্মিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলবে। তবে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরোধিতার পরও তিনি পদত্যাগ করছেন না বলেই জানা গেছে।
এই পরিকল্পনার ওপর মার্কিন প্রশাসনের অবস্থানও বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জেরুজালেম পোস্টকে দেওয়া বক্তব্যে দুটি ইসরায়েলি সূত্র জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন গাজা পরিস্থিতি নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা যে কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করলে তা ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ এবং বৃহস্পতিবারের নিরাপত্তা বৈঠকের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে।
একটি সূত্র জেরুজালেম পোস্টকে বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসন গাজায় মানবিক সহায়তার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।’
এদিকে গতকাল বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি গাজার জনগণের জন্য খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে। এই সহায়তার আর্থিক ও সরবরাহ বিষয়ক দিকগুলোতে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করতে হবে। আরব রাষ্ট্রগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।’ গাজা পুরোপুরি দখলের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত।’
এই পরিকল্পনার ফলে গাজার মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা গাজার খাদ্য সংকট, পানির ঘাটতি ও বাস্তুহীনতার ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তার ওপর ১০ লাখ মানুষের স্থানচ্যুতি এবং দীর্ঘমেয়াদি সামরিক উপস্থিতি পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0