শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অবশেষে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপসের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলছে নেপাল

নেপালের যোগাযোগ, তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর )  রাতে এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে গৃহীত হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।

সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: রাজধানী কাঠমান্ডুতে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার পর অবশেষে ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপসের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা।

নেপালের যোগাযোগ, তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর )  রাতে এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে গৃহীত হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।

“সরকার জেন জি’দের দাবি মেনে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আন্দোলনকারীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ— আপনারা শান্ত হোন এবং বাড়ি ফিরে যান”,মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন পৃথ্বী সুব্বা গুরুং।

পৃথ্বী সুব্বা গুরং সাংবাদিকদের আরও জানান, সোমবারের সহিংসতা তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পৃথ্বী সুব্বা গুরুং। সেই কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমগুলোকে নিবন্ধনের জন্য গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।

কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকারিভাবে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা।

এদিকে, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ করে দেশটির স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্মকে। জেন জি নামে পরিচিত এই তরুণ প্রজন্ম গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

অবশেষে রোববার থেকে শুরু হয় আন্দোলন এবং সোমবার তা রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভে নেমেছেন শিক্ষার্থী-জনতা। শুরুর দিকে এই বিক্ষোভে শীর্ষ দাবি হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি এলেও গতকাল এটি প্রায় পুরোপুরি সরকারবিরোধী আন্দোলনে মোড় নেয়। কাঠমান্ডুর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত নিহত হন ২০ জন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।

বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে গতকাল পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলিরও পদত্যাগের দাবি ওঠা শুরু করেছিল।

সোমবারের (৮ সেপ্টেম্বর ) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী অলি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স জানিয়েছে যে তারা কখনও নেপালে সরকারিভাবে নিবন্ধন করবে না।

“আমরা গত প্রায় দেড় বছর ধরে এই ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমরা শুধু তাদের নেপালের আইন মেনে চলতে বলেছিলাম; কারণ এটি সঙ্গে আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের সম্মানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।”

সূত্র : এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড

বাংলাফ্লো/এফএ

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0