বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধি দল।
শনিবার (২৪ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
এর আগে, শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে আটটার দিকে এনসিপির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যমুনায় প্রবেশ করে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বধীন প্রতিনিধি দলটি।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি দাবি ছিল, যেটি ৩০ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাতে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা হয় সেবিষয়ে বলা হয়েছে। জুলাই মাসেই জুলাই সনদ আসতে পারে বলে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসনের কাজটা ধীরগতিতে চলছে। সঞ্চয়পত্র ও ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তা এখনও অনেকে পাননি। শহীদ ও আহতদের জন্য সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো যেন দ্রুত নিশ্চিত করা হয় সে বিষয়ে জানানো হয়েছে।
শেখ হাসিনার আমলে হওয়া সব নির্বাচনকে অবৈধ করতে বলা হয়েছে এনসিপির পক্ষ থেকে বলে জানান নাহিদ। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারছি না। এ কমিশন পুনর্গঠন করার দাবি জানানো হয়েছে। নতুন কমিশনের অধীনে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
নাহিদ বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার, সংস্কার বা জুলাই সনদ এবং গণপরিষদ ও আইনসভা নির্বাচন এ তিনটির সমন্বিত একটি পরিকল্পনা বা রোডম্যাপ চেয়েছি সরকারের কাছে।
এসময় ছাত্র উপদেষ্টা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তারা গিয়েছে, তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। গণঅভ্যুত্থানে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে তারা কাজ করছে সেখানে তাদের হেয় করা, আমাদের সঙ্গে তাদের জড়ানো এবং তাদের পদত্যাগের দাবির নিন্দা জানিয়েছি। এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছি আমরা।
এর আগে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জামায়াতে ইসলামীর দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। অন্য সদস্য হলেন নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
পরে সংবাদ সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর মানুষ তিনটি নির্বাচনে তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, এবার তারা নিঃসংকোচে নিজেরা সেই অধিকার প্রয়োগ করতে চায় এবং এ সুযোগ পাবে নিশ্চিত হবে।
এ সময় সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারও কোনো পদত্যাগ চায়নি। প্রয়োজন অনুভব করলে সে বিষয়ে জানানো হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকের মাধ্যমে পুরো অস্থিরতা দূর হবে বলে আমরা আশাবাদী। বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি।
প্রধান উপদেষ্টা তাদের কথা গভীর মনযোগ সহকারে শুনেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন যে দেশ আমাদের সবার। তিনি দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চান। তিনি যেনতেন নির্বাচন দেখতে চান না। সব দলের কথা শুনে তিনি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আমরা মনে করি।
নির্বাচন নিয়ে কী আলাপ হয়েছে, এমন প্রশ্নে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা শুধু নয়, সবাই সংস্কারের পর নির্বাচন চায়। তবে আমরা সময় বেঁধে দিইনি। সংস্কার শেষ হলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্য কিংবা তা না হলে রোজার পরপরই হতে পারে।
এর আগে সন্ধ্যায়, বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0