স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: দুই দশকেরও বেশি সময়ের চেনা আঙিনা ছেড়ে ৯ মাস আগে যে স্বপ্ন নিয়ে নাপোলিতে পাড়ি দিয়েছিলেন, তা যে অভিষেক মৌসুমেই এতটা সত্যি হবে, তা কি ভাবতে পেরেছিলেন স্কট ম্যাকটমিনে? নতুন ঠিকানায় সমর্থকদের মন জয় করতে তিনি সময় নেননি একেবারেই। সেরি আর শিরোপা নির্ধারণী দিনেও দ্যূতি ছড়ালেন এই স্কটিশ মিডফিল্ডার। দুর্দান্ত গোলে দলকে শিরোপার পথে এগিয়ে নেওয়ার পর, সেরি আর মৌসুম সেরা খেলোয়াড়ও হয়ে গেলেন তিনি।

লিগের শিরোপা-ভাগ্য নিজেদের হাতে রেখেই শুক্রবার শেষ রাউন্ডে মাঠে নামে নাপোলি। কাইয়ারির বিপক্ষে পুরোটা সময় আধিপত্য ছড়িয়ে ২-০ গোলে জিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে দলটি।

ম্যাচের ৪২তম মিনিটে সতীর্থের ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে শরীরটাকে পুরোপুরি শূন্যে ভাসিয়ে অসাধারণ এক অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে নাপোলিকে এগিয়ে নেন স্কটিশ মিডফিল্ডার। আর দ্বিতীয়ার্ধে আরেকটি চমৎকার গোল উপহার দেন রোমেলু লুকাকু।

ম্যাচ শেষ হতেই আবেগ যেন পেয়ে বসে ম্যাকটমিনেকে। মাঠেই বসে পড়েন তিনি। তার চোখ বেয়ে নেমে আসে আনন্দাশ্রু। বললেন, দলের সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলই এই শিরোপা।

“এই দলের প্রত্যেক খেলোয়াড় যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তা অবিশ্বাস্য। এই মানুষগুলোর এটা প্রাপ্য, প্রথম দিন থেকে তারা আমাদের পাশে থেকেছে। আমার জন্য, এখানে আসা এবং এই সাফল্য উপভোগ করাটা স্বপ্নের মতো। ”

নেপলসে ক্লাব সমর্থকরা ভালোবাসে তাকে ডাকতে শুরু করেছে ‘ম্যাকফ্রাতম’ নামে, তার নামের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছে ফ্রাতম শব্দ, যে নাপোলিতান শব্দের অর্থ আমার ভাই।

দলে বেশিরভাগ সতীর্থ, কোচ আন্তোনিও কন্তে এবং আশেপাশে অনেকেই ইতালিয়ান, তাই ম্যাকটমিনের জন্য ভাষার সমস্যা নিশ্চিতভাবেই আছে। তবে ফুটবলের ভাষায় সেই প্রতিকূলতা অনায়াসেই যেন দূরে ঠেলে দিয়েছেন তিনি।

“আমার ইতালিয়ান ভাষা মোটামুটি। আমি বুঝতে পারি, কিন্তু এই ভাষায় কথা বলার জন্য আরও আত্মবিশ্বাস দরকার এবং এটা সহজ নয়। যেসব মানুষ ইংরেজিতে কোনো কথা বলে না, তাদের সঙ্গে এটা বেশ সহজ। আমি (সবার) অনেক ভালোবাসা অনুভব করি।”

দুটি শব্দ অবশ্য ভালোই আয়ত্ত করেছেন ম্যাকটমিনে, যেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

“ফেস্তেজ্জামো, আনদিয়ামো”, এর অর্থ “চলো, উদযাপন করি।”

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে ২২ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে, গত অগাস্টে আড়াই কোটি পাউন্ড ট্রান্সফার ফিতে নাপোলিতে যোগ দেন ম্যাকটমিনে। দলটির হয়ে লিগে অভিষেক মৌসুমে ৩৪ ম্যাচ খেলে ১২টি গোল করার পাশাপাশি ৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি।

ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে দলের সফল পথচলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিই এবার পেলেন তিনি, হলেন ২০২৪-২৫ সেরি আর মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার।

বাংলাফ্লো/এসও