আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: চলতি বছরে সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছানো অভিবাসীদের মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে শীর্ষে উঠে এসেছেন বাংলাদেশিরা। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪৭৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসী ইতালির উপকূলে পৌঁছেছেন। এ সংখ্যা চলতি বছরে ইতালিতে আগত অন্যান্য দেশের অভিবাসীদের মধ্যে সর্বাধিক।

শুক্রবার ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর ইতালিতে মোট ৫১ হাজার ৮৫৫ জন অভিবাসী পৌঁছেছেন—যা ২০২৪ সালের ৫১ হাজার ৩৪১ জনের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৯ জনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। তবে এই সামগ্রিক হ্রাসের মধ্যেও বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

২০২৪ সালে সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছান ৮ হাজার ৫২৬ জন বাংলাদেশি, যা ২০২৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৭৬ জনে। ফলে এ বছর ইতালিতে আগত মোট অভিবাসীর প্রায় ৩০ শতাংশই বাংলাদেশি—যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসন প্রবাহে এ বছর একটি বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। আফ্রিকার দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশের পর সবচেয়ে বেশি অভিবাসী এসেছেন ইরিত্রিয়া (৭ হাজার ৯০ জন) ও মিসর (৬ হাজার ৫৫৮ জন) থেকে। এছাড়া পাকিস্তান, সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, তিউনিশিয়া, ইরান, সিরিয়া, গিনি, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, মালি ও আফগানিস্তান থেকেও কয়েক হাজার মানুষ ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছেন। আরও কিছু অভিবাসীর পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনো চলমান।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের মে থেকে সেপ্টেম্বর সময়টি ছিল অভিবাসনের প্রধান মৌসুম। মে মাসে ৭ হাজার ১৭৮ জন, জুনে ৭ হাজার ৮৯ জন, জুলাইয়ে ৬ হাজার ৪৮৭ জন, আগস্টে ৬ হাজার ১৪৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩১৫ জন ইতালিতে পৌঁছান। অক্টোবরের শুরুতে এ প্রবাহ প্রায় স্থবির হয়ে গেছে।

এ ছাড়া অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক একক অভিবাসীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ১৫৬ জন শিশু ইতালিতে পৌঁছেছে, যা গত বছরের ৮ হাজার ৭৫২ জনের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের ১৮ হাজার ৮২০ জনের তুলনায় অনেক কম।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের অভিবাসন প্রবাহে তার তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং দক্ষিণ এশীয় অভিবাসনের নতুন ধারা ইতালির ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

বাংলাফ্লো/সিএস