Logo

গাজার ইউরোপিয়ান হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ২৮

হামাস পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৮ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: হামাস পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৮ জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের মতে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজা হাসপাতালে একযোগে ছয়টি বোমা ফেলেছে, যার ফলে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ আঙ্গিনা এবং আশেপাশের এলাকা উভয়ই আঘাত হেনেছে।

এদিকে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী জাবালিয়া এলাকায় কমপক্ষে চারটি আক্রমণ চালিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা তীব্রতর করেছে।

মধ্যরাত থেকে কমপক্ষে ৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা।

দক্ষিণ গাজার ইউরোপীয় এবং নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনী বোমা হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩০ জনকে হত্যা করার কয়েক ঘন্টা পরেই সর্বশেষ হামলাগুলো শুরু হয়েছে, যার মধ্যে চিকিৎসা নিতে আসা একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।

ইসরায়েলের আশকেলন এবং সেদেরোতে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের রকেট হামলার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই অঞ্চলে জোরপূর্বক স্থানচ্যুতির আদেশ জারি করার পর হামলাগুলো চালাচ্ছে।

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ইউরোপিয়ান হাসপাতালের ভেতরে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

বিস্ফোরণে সেখানে দাঁড়ানো অনেক গাড়ি মাটিচাপা পড়ে যায়, যার মধ্যে একটি বড় বাসের অংশও ছিল।

চোখের সামনে ঘটনা দেখেছেন এমন ব্যক্তিরা জানান, হামলার সময় ইসরায়েলি ড্রোন হাসপাতাল ভবনের চারপাশে আকাশপথে নজরদারি চালাচ্ছিল, যার কারণে উদ্ধারকারীরা ভেতরে ঢুকতে পারেনি।

একটি ছোট ড্রোন থেকে হামলায় দুই জন সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা আহত হন, তখন তারা ইউরোপিয়ান হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। আইডিয়ালস নামের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার প্লাস্টিক সার্জন ডা. টম পোতকার বলেন, তিনি হাসপাতালে ছিলেন যখন হামলা হয়।‘একটির পর একটি ছয়টি বিশাল বিস্ফোরণ হয়। কোনো ধরনের পূর্বাভাস ছাড়াই এগুলো সরাসরি হাসপাতালকে আঘাত করে। চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’

আহত ও নিহতদের খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে ওই হাসপাতালেও আগে আরেকটি হামলা হয়েছিল, ফলে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন।

চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গতকাল মঙ্গলবার নাসের হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও আরেকটি হামলা হয়। সেখানে দুইজন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি ফটো সাংবাদিক হাসান আসলিহ।

হাসান আসলিহ আগের এক ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়ে ওই হাসপাতালেই প্রায় এক মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার তাকে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়। যাতে তিনি মারা যান।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আগে অভিযোগ করেছিল, হাসান আসলিহ ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ওই সময়ের এক হামলায় তার সহকর্মী হেলমি আল-ফাকাউয়ি নিহত হন এবং আরো কিছু সাংবাদিক আহত হন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থা আইএসএ একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, হামাস এখনও গাজার হাসপাতালগুলোকে তাদের কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছে—যা হামাস অস্বীকার করে আসছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইউরোপিয়ান হাসপাতালে হামলার লক্ষ্য ছিল মোহাম্মদ সিনওয়ার—যিনি গাজায় হামাসের সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই এবং এখন গোষ্ঠীটির সামরিক শাখার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে ধারণা করা হয়। হামাস এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ছোড়া দুটি রকেট তারা প্রতিহত করেছে। ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখা এই রকেট হামলার দায় স্বীকার করেছে।.

তথ্য সুত্রঃ বিবিসি ও আল জাজিরা

বাংলাফ্লো/এসকে

Leave a Comment

Comments 0