বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: দেশের বিনোদন জগতের আওয়ামীপন্থিদের কালচারাল ফ্যাসিস্ট অবিহিত করে তাদের বিচার দাবি করেছেন বিএনপিপন্থি শিল্পীরা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে জাসাসের অন্তর্ভুক্ত শিল্পীরা বলেন, বিগত ১৭ বছর এই কালচারাল ফ্যাসিস্টরা দাপিয়ে বেড়িয়েছে। গত এক বছর তারা ঘাপটি মেরেছিল। কিন্তু তারা গত ১৫ আগস্ট তারা আত্মপ্রকাশ করেছে অনেক জায়গা থেকে। আমরা তাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, এই দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে পরিণাম ভয়াবহ হবে। এই দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে দাদাদের দেশে যেভাবে চলে গেছে আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, ঠিক সেখানেই আপনাদেরকে চলে যেতে হবে। ওই দেশে বসে আপনাদেরকে টাকা পাঠাচ্ছে। আর আপনারা এখানে ১৫ আগস্টে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
তারা আরও বলেন, বিটিভিতে গিয়ে আপনারা কি করেছেন সেটা আমরা দেখেছি। এফডিসির ভেতরে কি করেছেন সেটা আমরা দেখেছি। সবকিছু দলীয়করণ করে আপনারা একতরফাভাবে এই দেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছেন। এই দেশের সম্পদকে দেশের বাইরে পাচার করেছেন। সেই সুযোগ এই বাংলাদেশে আর হবে না। আপনাদেরকে আমরা বলতে চাই, আপনারা যেভাবে আছেন ওইভাবে ভালো থাকেন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করব, এই কালচারাল ফ্যাসিস্ট যারা আছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুন এবং তাদের আইন অনুযায়ী সাজা দিন।
সংগীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতি বলেন, আমাকে গত ১৫-১৭ বছর কোনো বক্তব্য দিতে দেখেননি। কারণ, আমি গান গাইছিলাম ১৯৯২ সালে, এজন্য আমি দোষী হয়েছি। তারা আমার ভাতাটাও বন্ধ করে দিয়েছে। এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে। এই দিন নিয়ে যাবে সেই দিনের কাছে। আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।
সংগীত শিল্পী মৌসুমি বলেন, আজ কালচারাল ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। আমরা যেহেতু সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত, সেই জায়গা থেকে আমি বলব, বিগত ১৫ বছর আমরা যে আন্দোলনে শামিল ছিলাম, এই আন্দোলনের সময় আপনারা কোথায় ছিলেন? যারা ওই ধরনের পোস্ট দিয়েছিলেন ফেসবুকে, দেখছি যে তাদের এত আবেগ। তারা আবেগ ধরে রাখতে পারছে না দেখে আবেগগুলো তুলে ধরছেন। তো আপনাদের এই আবেগগুলো তখন কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন এত কষ্ট করছিল, খেতে পারছে না, মন খুলে কথা বলতে পারছে না, তাদের অধিকার বুঝে পাচ্ছে না, ভোট দিতে পারছে না, তখন আপনারা কই ছিলেন? তখন আপনাদের এই আবেগটা বের হয়ে আসে নাই।
চলচ্চিত্র নির্মাতা ডায়মন্ড বলেন, আজ আপনারা নিশ্চয়ই দেখছেন ভারতের দক্ষিণের একজন অভিনেতা থালাপতি বিজয় স্বৈরাচার উপাধি দিয়ে মোদির বিরুদ্ধে অবস্থান আহ্বান করেছেন। ওই আন্দোলনে লাখ লাখ মানুষ এই চলচ্চিত্র অভিনেতার ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হয়েছে। আর আমরা কি দেখলাম, আমরা দেখলাম গুলি করে শতশত ছেলেমেয়েকে হত্যা করা হচ্ছে, শিশুদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালালো আর আমাদের এখানকার কতিপয় চলচ্চিত্র নাট্য সংগীত– এই সমস্ত শিল্পীরা টেলিভিশনের ইট ধরে কান্নাকাটি করছে। কেউ আবার উপদেশ দিচ্ছে প্রশাসনকে ও পুলিশকে যে বাচ্চাদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপ করো।
তিনি আরও বলেন, যখন বাচ্চাদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, তখন দেখলাম আলো আসবে নামে গ্রুপ খুলে উৎসাহিত করা হয় ওই ফ্যাসিস্ট সরকারকে গুলি চালানোর জন্য। আপনারা কোনোদিন চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের ছিলেন না, সেটা ওইদিনই প্রমাণ হয়ে গেছে। আপনারা স্বৈরাচারকে সমর্থন দিয়েছিলেন, এ ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা তাদের বিচার দাবি করছি।
মানববন্ধনে জাসাসের যুগ্ম আহ্বায়ক ইথুন বাবুসহ অন্য শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাফ্লো/এফএ
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0