বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: ন্যায়বিচার নিশ্চিতে মামলাজট বিচার বিভাগের জন্য বড় বাধা। এই বাধা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও সফলতা এসেছে খুব সামান্য। তবে থেমে নেই বিচার বিভাগ প্রশাসন। তাই মামলা নিষ্পত্তির আরেকটি উদ্যোগ হাতে নিয়েছে প্রশাসন। যার অংশ হিসেবে এবার প্রায় ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ঝুলে থাকা ১০ হাজারের বেশি মামলার নিষ্পত্তির বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীর স্বাক্ষরে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের দায়ের করা ২০০০ সালের আগের পুরাতন বিভিন্ন প্রকার মামলা দীর্ঘদিন যাবৎ শুনানি ও নিষ্পত্তি না হওয়ায় ১০ হাজার ৩৮৫টি মোকদ্দমা চিহ্নিত বা বাছাই করে তা শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য উল্লেখিত মোকদ্দমাগুলো ২০ জুলাই ২০২৫ তারিখ থেকে শুনানি গ্রহণের জন্য এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চে প্রেরণ করা হলো।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের বিগত ১০ জুলাইয়ের নির্দেশনার আলোকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি তথা সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এমন উদ্যোগ এ সংক্রান্ত অধস্তন আদালতে ঝুলে থাকা মামলাগুলোর ক্ষেত্রেও সফলতা নিয়ে আসবে বলে মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী বিএম ইলিয়াস কচি। এ বিষয়ে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এটি অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। হাইকোর্টে আমরা দেখি এখনও ১৯৯৭/৯৮ সালের আগের মামলাও পেন্ডিং আছে। রিট মামলাগুলোর আদেশের কার্যকারিতা দ্রুত হয়ে যায় বলে এসব মামলা তেমন পেন্ডিং থাকে না।
উচ্চ আদালতে সবচেয়ে বেশি দেওয়ানী ও ফৌজদারি মামলা পেন্ডিং থাকে। যেমন ধরুন ফৌজদারি মামলার প্রক্রিয়া হাইকোর্টে স্টে (স্থগিত) রাখার পর বছরের পর বছর আর কোনও শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয় না। যার ফলে এসব মামলাও হাইকোর্টে ঝুলে থাকে। আবার অধস্তন আদালতেও এ সংক্রান্ত মামলাগুলো ঝুলে যায়। ফলে দীর্ঘদিনে মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ নষ্ট হয়, সাক্ষীদের পাওয়া যায় না ইত্যাদি। তাই এই উদ্যোগটি অবশ্যই প্রশংসার। এমন উদ্যোগ আরও গ্রহণ করা উচিৎ বলেও মনে করেন এই আইনজীবী।
মামলার নিষ্পত্তির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, উদ্যোগটিকে আমি স্বাগত জানাই। বিচার বিভাগ ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য এটি একটি কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমি মনে করি। এই যে ২০০০ সালের আগে যেসব মামলা এখনও রায় হয়নি সেসব মামলার বিচারপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে বসে আছেন। আশা করছি এই উদ্যোগের ফলে তাদের সেই কষ্টের দিন লাঘব হবে। আমি চাই, সুপ্রিম কোর্ট যেন এমন আরও কিছু কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বাংলাফ্লো/এসকে
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0