আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ঢাকা: ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আজ সোমবার বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) শুরু হচ্ছে বৈশ্বিক সম্মেলন। নতুন এই উদ্যোগকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
বৈশ্বিক এ সম্মেলনের আয়োজক ফ্রান্স ও সৌদি আরব। ফ্রান্স জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ায় এর কূটনৈতিক গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
গত শনিবার ও রোববার যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও পর্তুগাল ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্মেলনের সময় ও পরবর্তীতে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, সান ম্যারিনো, অ্যান্ডোরাসহ আরও কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে জানা গেছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই সম্মেলন বয়কট করেছে। ইসরায়েলের জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের সদস্য ড্যানি ডেনন সম্মেলনটিকে “সার্কাস” আখ্যা দিয়ে এএফপিকে বলেছেন, “এই সম্মেলনে কোনো কাজ হবে বলে আমাদের মনে হয় না এবং আমরা মনে করি, সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করতে এই সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বিরোধিতা করে আসছেন। তার নির্দেশেই গত প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এতে গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং পশ্চিম তীরের দখলকৃত এলাকার সীমানা আরও বিস্তৃত করা হয়েছে।
এই সময়ে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত একাধিকবার ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে। বিশেষ করে আমিরাত পশ্চিম তীর দখল সম্প্রসারণকে “রেড লাইন” বলে উল্লেখ করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের আশঙ্কা, চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বহুদিনের আলোচ্য ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’ কার্যত বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত সাত পৃষ্ঠার এক নথিতে সম্মেলনটিকে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে “বাস্তব, সময়োচিত এবং অপরববর্তনীয় পদক্ষেপ” বলে উল্লেখ করেছে। নথিতে হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেন নয়েল ব্যারট রোববার বলেছেন, “আসন্ন বৈশ্বিক সম্মেলন সুদূর ভবিষ্যতের প্রতি কোনো ফাঁপা প্রতিশ্রুতি নয়, বরং এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি, বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ অবাধ থাকার একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করা।”
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির পর মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে ভবিষ্যৎ কী হবে, সে বিষয়ক সিদ্ধান্ত নিতেই নিউইয়র্কে বৈশ্বিক এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।”
সূত্র : এএফপি, রয়টার্স
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0