বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হোয়াইট ওয়াশের স্বপ্ন হলো না পূরণ, পাকিস্তান জিতল ৭৪ রানে

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মিরপুরে সিরিজের ৩য় ম্যাচে টস জিতে বোলিং নিয়েছে বাংলাদেশ।

ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার মিশনে বাংলাদেশ ৭৪ রানে হেরে গেছে ম্যাচ।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মিরপুরে সিরিজের ৩য় ম্যাচে টস জিতে বোলিং নেয় বাংলাদেশ।

প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে ধস দেখেছিল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার তারা নতুন রূপে তারা। তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে প্রথম দুই ওভারে খরুচে ছিল বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ওভারে শেখ মেহেদী হাসান ১০ রান দেন। শাহিবজাদা ফারহান একটি করে চার ও ছয় মারেন। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের ছয় বলে ১৪ রান তুলেছে পাকিস্তান।

ওপেনিং জুটিতেই তারা পঞ্চাশ ছুঁয়েছে। ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে সাইম আইয়ুবের চারে দলের ফিফটি হয়। পাওয়ার প্লেতে তাদের সংগ্রহ ৫৭ রান। ৩৭ রানে অপরাজিত শাহিবজাদা, ১৪ রানে খেলছেন সাইম। এর মধ্যে ষষ্ঠ ওভারে সর্বোচ্চ ১৫ রান দেন তাসকিন।

বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে শাহিবজাদা ফারহান ২৯ বলে চারটি চার ও পাঁচটি ছয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেন। সপ্তম ওভারের শেষ বলে পঞ্চাশ ছোঁন ফখর জামানের জায়গায় নামা এই ব্যাটার। পরের ওভারে সাইম আইয়ুবকে ফিরিয়ে ৮২ রানের ওপেনিং জুটি ভেঙেছেন নাসুম আহমেদ। ১৫ বলে দুটি চার ও এক ছয়ে ডিপ মিডউইকেটে শামীম হোসেনের ক্যাচ হন তিনি। ৭.৫ ওভারে ৮২ রানে ১ উইকেট হারালো পাকিস্তান।

শাহিবজাদার এটি দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি, প্রথমটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। গত মে মাসে লাহোরে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

দশম ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ হারিসের বিরুদ্ধে নাসুম আহমেদের এলবিডব্লিউর আবেদনে আউট দেন আম্পায়ার। তবে পাকিস্তানি ব্যাটার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান। আল্ট্রা এজে বল তার প্যাডে আঘাত করার আগে গ্লাভস ছুঁতে দেখা গেছে। ১ রানে বেঁচে যান হারিস। ২০ ওভার ইনিংসের অর্ধেক পার করে পাকিস্তানের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৮৬ রান।

নাসুম আহমেদ পাকিস্তানের দুই ওপেনারকেই আউট করলেন। সাইম আইয়ুবকে ২১ রানে মাঠছাড়া করেন। ৮২ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না শাহিবজাদা ফারহান। তাকেও ফিরিয়েছেন নাসুম। ডিপ মিড উইকেটে মেহেদী হাসানের ক্যাচ হন তিনি। ৪১ বলে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ৬৩ রান করেন শাহিবজাদা। ১১.১ ওভারে ৯৩ রানে দুই উইকেট হারালো পাকিস্তান। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ হারিসের জুটিতে একশ ছোঁয় তারা।

১১৫ রানে পাকিস্তানের তৃতীয় উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ। ১৪তম ওভারে তাসকিন আহমেদের তৃতীয় বলে থার্ড ম্যানে নাসুম আহমেদের ক্যাচ হলেন মোহাম্মদ হারিস। ১৪ বলে ৫ রানে আউট হলেন তিনি।

শাহিবজাদা ফারহানের পর হাসান নওয়াজ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের রানের গতি ধরে রাখেন। অবশেষে তাকে ফিরতে হলো। ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদী হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে মাঠ ছাড়লেন নওয়াজ। ১৭ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে ৩৩ রান করে শরিফুল ইসলামের শিকার হলেন তিনি। পাকিস্তান ১৪.৫ ওভারে ১৩১ রানে চার উইকেট হারালো।

প্রথম দুই ওভারে ৮ রান দিয়ে বেশ মিতব্যয়ী ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রথম দুই ওভারে ৮ রান দেন। ১৬তম ওভারে প্রথম দুই বলে ডট দেওয়ার পর উইকেটও পেলেন তিনি। হুসেইন তালাতকে লিটন দাসের ক্যাচ বানালেন এই পেসার। ৪ বলে ১ রান করেন পাকিস্তানি ব্যাটার। ১৫.৩ ওভারে ১৩২ রানে ৫ উইকেট হারালো পাকিস্তান।

প্রথম তিন ওভারে ৯ রান দেওয়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন শেষ ওভার করেন ১৯তম ওভারে। মোহাম্মদ নওয়াজ তার ওপর চড়াও হন। ১৯ রান আসে ওই ওভারে। পরের ওভারে পাকিস্তানি ব্যাটার আউট হলেন। তাসকিন আহমেদের বলে ২৭ রান করে নাঈমের ক্যাচ হন নওয়াজ। ১৯.১ ওভারে ১৭৩ রানে ৬ উইকেট হারালো সফরকারীরা। এক বল বিরতি দিয়ে ফাহিম আশরাফকে ৪ রানে তানজিদ হাসান তামিমের ক্যাচ বানান তাসকিন। ১৯.৩ ওভারে ১৭৭ রানে সপ্তম উইকেট পড়েছে।

ফখর জামানের জায়গায় ঢুকে শাহিবজাদা ফারহান বাজিমাত করেছেন। সাইম আইয়ুবকে নিয়ে ওপেনিং জুটিতে ৮২ রান যোগ করেন তিনি। তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৮ রান করেছে। হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজের ঝড়ো ইনিংসও বেশ বড় ভূমিকা রাখেন। তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম শুরুর দিকে বেশ খরুচে ছিলেন। শেষের আগের ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দেন ১৯ রান। তাতে চলতি সিরিজে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ করে পাকিস্তান।

তাসকিন আহমেদ শেষ ওভারে জোড়া আঘাতে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন। দুটি উইকেট পান নাসুম আহমেদ। শরিফুল ও সাইফউদ্দিন একটি করে উইকেট নেন।

ইনিংসের দ্বিতীয় বলে তানজিদ হাসান আউট হলেন। সালমান মির্জার বলে হারিসের ক্যাচ হন তিনি। লিটন দাসের চারে রানের খাতা খুলেছে বাংলাদেশ। পরের ওভারে তিনি ফাহিম আশরাফের বলে বোল্ড হন। ৮ বলে ৮ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১.৪ ওভারে ১০ রানে ২ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

১০ রানের মধ্যে তানজিদ হাসান ও লিটন দাসের বিদায়ের পর হাল ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলী ও মেহেদী হাসান। চতুর্থ ওভারে মিরাজকে ফেরান ফাহিম আশরাফ। ৮ বলে ১০ রান করে আব্বাস আফ্রিদির ক্যাচ হন তিনি। সাত বলের মধ্যে জাকের ও মেহেদীর বিদায়। পরের ওভারে মাত্র ২ বল খেলে ১ রান করে সালমান মির্জার কাছে বোল্ড হন তিনি। এক বল পর মেহেদী বোল্ড হন পাকিস্তানি পেসারের কাছে। ৪.৪ ওভারে ২৫ রানে ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

২৫ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে তারা পাঁচ ব্যাটারের বিনিময়ে করে ২৯ রান। সপ্তম ওভারে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে শামীম হোসেন ৫ রান করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগার বলে বোল্ড হন। ৬.৩ ওভারে ৩৪ রানে তাদের ৬ উইকেট নেই।

ওপেনিংয়ে নেমে মোহাম্মদ নাঈম সাত নম্বর ব্যাটার হিসেবে আউট হলেন। অষ্টম ওভারে আহমেদ দানিয়ালের শিকার হন তিনি। মাত্র ১০ রান করে মিড অফে সালমান আগার সহজ ক্যাচ হন নাঈম। ১৭ বল খেলেছেন এই ওপেনার। ৪১ রানে বাংলাদেশ হারালো ৭ উইকেট।

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও নাসুম আহমেদের জুটিতে নবম ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশ পঞ্চাশ ছুঁয়েছে।

১২তম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নেন হুসেইন তালাত। তৃতীয় বলে চার মারেন নাসুম আহমেদ। তাকে শেষ বলে আহমেদ দানিয়ালের ক্যাচ বানালেন তালাত। ১৩ ওভার শেষে ৬৫ রানে ৮ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ১৩ বলে ১ চারে ৯ রান করেন নাসুম।

বাংলাদেশের হারের আনুষ্ঠানিকতার জন্য আর এক উইকেট হাতে রয়েছে। ১৫তম ওভারে মোহাম্মদ নওয়াজের পঞ্চম বলে নবম ব্যাটার হয়ে মাঠ ছেড়েছেন তাসকিন আহমেদ। ৬ বলে ৭ রান করে হুসেইন তালাতের ক্যাচ হন তিনি। ৮১ রানে ৯ উইকেট পড়লো বাংলাদেশের।

 মোহাম্মদ নওয়াজের ১৬তম ওভারের ৪র্থ বলে আব্বাস আফ্রিদির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ম্যাচের রণে ভঙ্গ দেন শরিফুল ইসলাম। পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে না পারার কষ্টে শেষ হয় বাংলাদেশ পাকিস্তানের ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

বাংলাফ্লো/এসও

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0