বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: ঢাকার হোটেল সোনারগাঁয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার। বৈঠকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা সই হওয়ার কথা রয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর একটি হোটেলে এ বৈঠক শুরু হয়।
শনিবার সকালে ইসহাক দার প্রথমে বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে প্রাতঃরাশ বৈঠকে যোগ দেন। এরপর সকাল ১০টায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে একান্ত বৈঠকে বসেন তিনি ও তৌহিদ হোসেন। এর পরই দুই দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা ইস্যু আলোচনায় আসছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সফরের অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে ইসহাক দারের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছে। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
এ ছাড়া পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। সফর শেষে তিনি রোববার রাতে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
চুক্তি ও সমঝোতার মধ্যে রয়েছে—
* কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি
* সাংস্কৃতিক বিনিময়
* দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা
* বাণিজ্য ও বিনিয়োগে যৌথ গ্রুপ গঠন
* বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও পাকিস্তানের সমপর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা
* বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার মধ্যে সমঝোতা।
এ ছাড়া মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি সইয়ের বিষয়েও আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বৈঠকে রাজনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, অর্থনীতি, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আন্তঃসংযোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রীও ঢাকায় অবস্থান করছেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকে ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, যুদ্ধক্ষতির ক্ষতিপূরণ, বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, যৌথ সম্পদের বণ্টন এবং ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে পাওয়া বৈদেশিক সহায়তার পাওনা আদায়ের বিষয়গুলোও উত্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0