বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছাত্রদল কর্মীর মুক্তির দাবিতে বিএনপির থানা ঘেরাও, মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনায় একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মানিক নামের একজনকে থানায় আনা হয়েছিল।

ছবিঃ সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানায় ছাত্রদলের এক কর্মীকে আটক করার পর বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীর বিক্ষোভ এবং থানা ঘেরাওয়ের অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনায় একটি অভিযোগের ভিত্তিতে মানিক নামের একজনকে থানায় আনা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার আশ্বাসে এবং মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, শনিবার (৫ জুলাই) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট এবং সমন্বয় কমিটির সদস্য নাহারুল ইসলাম মাস্টারের নেতৃত্বে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে থানার সামনে জড়ো হন। পরে আটক ছাত্রদল কর্মী মানিককে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা সরকারবিরোধী মিছিলের নামে সংগঠিত হয়ে সহিংসতা ঘটাতে পারে—এমন গুঞ্জনের ভিত্তিতে তাঁরা থানা পুলিশকে অবহিত করতে যান। এ সময় মানিকের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। তবে তাঁরা থানা ঘেরাও করেননি বা কাউকে ছাড়িয়ে নিতে যাননি বলে দাবি করেন।

জানা গেছে, দর্শনা পৌর ছাত্রদলের সদস্য মানিকের সাথে এক প্রতিবেশীর জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। অভিযোগ রয়েছে, ওই বিরোধের জেরে প্রতিবেশীর বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হলে শনিবার বিকেলে পুলিশ মানিককে আটক করে।

পরবর্তীতে সন্ধ্যায় বিএনপির কয়েকজন নেতা থানায় গেলে তাকে ছাড়েনি ওসি। রাতেই দুই শতাধিক নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে থানার দিকে অগ্রসর হয়। ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে থানা চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করলে বিএনপি নেতারা তাদের থামিয়ে দেন এবং থানার গেটের সামনে অবস্থান নিতে বলেন। পরে দলের সিনিয়র নেতারা ওসির সাথে আলোচনা করে মানিককে ছাড়িয়ে নেন।

দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট বলেন, গুঞ্জন ছিল আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে। এ কারণে আমরা পুলিশকে অবহিত করতে ও গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে গিয়েছিলাম।

ছাত্রদল কর্মী মানিক প্রসঙ্গে নাহারুল ইসলাম মাস্টার বলেন, পারিবারিক বিরোধের জেরে দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছিল। মানিকের সাথে বিরোধে থাকা পরিবার আওয়ামী লীগের অনুসারী। আমরা তাকে ছাড়িয়ে নিতে যাইনি বরং অনুরোধ করেছি যেন এজাহারভুক্ত না করা হয়, কারণ আমরা মনে করি সে নির্দোষ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস বলেন, থানা ঘেরাও এমন না। জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো গণ্ডগোল না হয় এ জন্য দর্শনা থানা পুলিশ একজনকে নিয়ে এসেছিল। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করবে মর্মে মুচলেকায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তার পক্ষের কয়েকজন প্রতিবাদ করেছে। থানা ঘেরাওয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাফ্লো/এ্নআর

Leave a Comment

Comments 0