বাংলাফ্লো প্রতিনিধি,
ঢাকা: জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক সুধী সমাবেশে গণঅভ্যুত্থানের সকল পক্ষের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫টায় জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান। জুলাই অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল— একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন ৫ আগস্ট। এক বছর আগে এ দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, যাদের যূথবদ্ধ আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন, তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট উপলক্ষে আমি স্মরণ করছি— সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর, পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। আমি গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমি গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করি— সব জুলাইযোদ্ধাকে যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন, হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি। জাতি তাদের অবদান শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সব খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই শহীদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাইযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সব সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলমান আছে। একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।তিনি বলেন, জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো— একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা যেকোনও মূল্যে রক্ষা করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন, সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনও স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।
বাংলাফ্লো/সিএস
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0