Logo

বাজেটে ত্রুটি সংশোধন করতে সরকারের প্রতি আনু মুহাম্মদের আহ্বান

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি কর্তৃক আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় শতকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ও সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হচ্ছে আগামী ২২ জুন। তার আগেই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে যেসব ত্রুটি রয়েছে, তা সংশোধন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

শনিবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খান হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি কর্তৃক আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় শতকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ও সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

আনু মুহাম্মদ বলেন, এবারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে যে, সুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। এটা যদিও বর্তমান সরকারের দোষ না। এটার জন্য আগের সরকারই দায়ী।

বাংলাদেশের যে বাজেট ঘোষণা হয়েছে, এটা এই দেশের সাধারণ মানুষের জন্য বাজেট না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুশি রাখতেই এই বাজেট ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত ১১০টি পণ্যের সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহার, ৬৫টি পণ্যের শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার, ৪৪৫টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস। যুদ্ধাস্ত্র ৫ পারসেন্ট থেকে শূন্য পারসেন্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া আইএমএফের প্রভাবে ছোট ছোট শিল্প মালিকদের শিল্প পণ্য, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি অনলাইনে পণ্য বিক্রির ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। মূলেতো আমদানিকৃত পণ্যের ওপর সরকার রাজস্ব আয় করে থাকে। কিন্তু শুল্ক প্রত্যাহার ও হ্রাস করে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হলো। ফলে এর প্রভাব পড়বে দেশের মানুষের ওপর।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখন যেসব সংস্কার কমিটিগুলো রয়েছে, তারা যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো অল্প করেও যদি বাস্তবায়ন করা হতো তাহলেও বাজেটে কিছুটা নতুনত্ব আসতো। সংস্কার কমিশনগুলো কি

স্রেফ অলংকার হিসেবে রয়েছে নাকি আমার জানা নেই। আমি চাই, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হোক।

আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার মেগাপ্রকল্প থেকে বেরুতে চায়, এটা তাদের প্রত্যাশা। কিন্তু যেসব মেগাপ্রকল্প এখন চলমান রয়েছে, সেগুলোরও একটি পর্যালোচনা করতে হবে। উন্নয়ন নাম দিয়ে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বিলাসী ও জনগণের জন্য বিপজ্জনক। যেমন- রূপপুর, মাতারবাড়ী, রামপাল এসব প্রকল্প থেকে সরকারের বের হয়ে আসার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। এখান থেকে বের হওয়ার জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিতে পারতো, তা হলো জাতীয় সক্ষমতার উন্নয়নের বিকাশ ঘটানো। আর এই বিকাশ ঘটানো হলে অনেক কম দামে আমরা গ্যাস পাবো, বিদ্যুৎ খাতে যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি রয়েছে তা আর দিতে হবে না। পরিবেশ বিনাশী কোনো প্রকল্পেও যেতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, তবে দুঃখজনক এই যে, বর্তমান সরকার যে বাজেট উপস্থাপন করেছে, তাতে এই ধরনের পরিকল্পনা নেই। বাজেটে আগের ধারাবাহিকতাই দেখা যাচ্ছে। যে ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন শুধু শিরোনামে দেখা যায়, বাস্তবতায় তা হলো জনগণের জীবন বিপন্নকারী।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, ড. হারুন অর রশিদ, ড. গোলাম রসুল, লেখক কল্লোল মোস্তফা, গবেষক ড. মাহা মির্জা প্রমুখ।

বাংলাফ্লো/এনআর

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0