জেলা প্রতিনিধি
শেরপুর: গত ৭২ ঘণ্টায় নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায়, শেরপুরের আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলার সব প্রধান নদ-নদীর পানি কমে এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে পাহাড়ি ঢলের রেখে যাওয়া ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। এখনও জেলার প্রায় ৬০০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে এবং নিঃস্ব হয়ে পড়া পরিবারগুলো বাঁধে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার খৈলকুড়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বিধবা রহিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “ঢলে বাড়িঘর সব নিয়ে গেছে। ...এখন ভিটে নাই, ঘর নাই, জমির ধান নাই। অসহায়ের মতো স্কুলে থাকছি, কিন্তু আর কয়দিন থাকব জানি না।”
আরেক কৃষক খোকন বলেন, “আমি ২৬ কাঠা জমি লাগাইছিলাম, ঢল আইসা সব জমি পলির নিচে গেছে। ...আমরা মহারশি নদীর দুই পাড়ে বেরি বাঁধ চাই।”
এর আগে, টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীতে মহারশি নদীর কাঁচা বাঁধ ভেঙে অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এই ঢলে ১১টি ঘরবাড়ি, অসংখ্য মাছের ঘের এবং প্রায় ১,৬০০ হেক্টর রোপা আমনের জমি ভেসে যায়। পানিতে ডুবে দুজনের মৃত্যুও হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২২ সালে ভেঙে যাওয়া বাঁধটি সময়মতো সংস্কার না করার কারণেই এবারও একই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমরা নিয়মিত মাঠে আছি... ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ায় আজ আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করছি ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাবো।”
বাংলাফ্লো/এইচএম
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0