বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকসহ আহত ১৫

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে রামু ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে বিজিবির আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত বাকিরা কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

কক্সবাজার: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বন্য হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আহত হাতির আক্রমণে চিকিৎসকসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে রামু ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে বিজিবির আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত বাকিরা কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে রামুর মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাজারকুল থোয়াইংগ্যকাটার বালুচড়া দক্ষিণের পাহাড়ে মাইন বিস্ফোরণে আহত হাতির চিকিৎসা দিতে গেলে চিকিৎসকসহ বনবিভাগের ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হন। তাদের মাঝে দুজন চিকিৎসকসহ তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এসব বিষয়টি নিশ্চিত করেন জানান।

ঢাকায় নেওয়া আহতরা হলেন, কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকারনাইন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্যসচিব মো. আতিকুর রহমান।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি বন রেঞ্জ থেকে খবর আসে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হাতিটি বর্তমানে রামু উপজেলার দারিয়ারদীঘি সংরক্ষিত বনে অবস্থান করছে। সে খবরের প্রেক্ষিতে শুক্রবার চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ সদস্যের একটি দল নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ দারিয়ার দীঘি সংরক্ষিত গভীর বনে যান। এসময় কিছু বুঝার আগে হঠাৎ পেছন থেকে সবার ওপর আক্রমণ করে হাতিটি। এতে ১৫ জনের সবাই আহত হন। হাতিটি আক্রমণ করে একটি বন্দুকও কেড়ে নিয়ে বনের ভেতর ফেলে দিয়েছিল। পরে অনেক খুঁজে বন্দুকটি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি আহত হাতিটি যাতে সুচিকিৎসা পায়। চিকিৎসা দিতে গিয়ে বনকর্মীরা আহত হলেও এখন হাতিটির গতিবিধি আমরা লক্ষ্য রাখছি।

বন কর্মকর্তা আরও জানান, মাইন বিস্ফোরণে হাতিটির সামনের ডান পা প্রায় অবশ হয়ে গেছে। ওই পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। বাকি তিনটি পায়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হচ্ছে হাতিটিকে। পায়ের ক্ষতের যন্ত্রণা নিয়ে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে হাতিটি। গত ৩ আগস্ট নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে হাতিটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়।

চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্ত ও পানিশূন্যতায় হাতিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘমেয়াদে নিবিড় পরিচর্যা দরকার আহত হাতিটির।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফ জানান, আহতদের মাঝে গুরুতরদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিজিবির হেলিকপ্টারে রামু ক্যান্টনমেন্ট থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। বিজিবি সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি সর্বদা মানবিক সহায়তা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ।

অপর এক সূত্র জানায়, আহত হাতির আক্রমণে গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বুকের হাড় ভেঙে গেছে। বাকি দুজনও নানা ভাবে জখম পাওয়া। এর মাঝেও মাঝেও স্থানীয় কিছু তরুণ আহত হাতিটির ক্ষুধা নিবারণে কলাগাছসহ নানা পাহাড়ি খাদ্য সরবরাহের চেষ্টা করছে।

বাংলাফ্লো/এফএ

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0