Logo

সরকারি পলিটেকনিকে ভর্তি হতেও দিতে হবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা

ভর্তির ক্ষেত্রে নেওয়া হবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা। এর মধ্যে ৭০ নম্বরের বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) পরীক্ষা হবে আর ৩০ নম্বর থাকবে শিক্ষার্থীর জিপিএর ওপর।

প্রতীকী ছবি

শিক্ষা ডেস্ক

ঢাকা: নতুন শিক্ষাবর্ষ (২০২৫-২৬) থেকে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ভর্তি হতেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হবে। ২৬ মে, সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম। কারিগরি শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে ভর্তির ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।     

 সমসাময়িক কারিগরি খাতের নানা বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ। এতে জানানো হয়, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি পলিটেকনিকে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে নেওয়া হবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা। এর মধ্যে ৭০ নম্বরের বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) পরীক্ষা হবে আর ৩০ নম্বর থাকবে শিক্ষার্থীর জিপিএর ওপর।

ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুধু সরকারিগুলোর জন্য ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছি কারণ বেসরকারিগুলো ছাত্র পায় না। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো বাণিজ্যিক, ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছিল যেটা কোয়ালিটি মেইনটেইন করতে পারি নি। আমার বোর্ডের চেয়ারম্যানকে আমি মৌখিকভাবে বলেছি প্রয়োজনে লিখিতভাবে বলব, তিনি যেন এটা ভেরিফাই করেন।’

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ল্যাবে আধুনিক মেশিনারিজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।

সংবাদ সম্মেলনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবির বিষয়ে কথা বলেন সচিব। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি ধাপে ধাপে পূরণ করা হচ্ছে।

ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এটাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আপনি ছাত্রদের বলেন তারা যেন এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে। আমরা তাদের জন্য যা করার করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। এসময় ৬ দফা দাবি পূরণের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগকে স্বাগত জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের ছয়দফাদাবিগুলো ছিলো-

১. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির হাইকোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন। মামলা বা রিট দায়ের করার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা এবং ২০২১ সালের বিতর্কিত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর নিয়োগের জন্য নিয়োগবিধি অনতিবিলম্বে বাতিল করা।

২. ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদি অব্যাহত রাখা এবং মানসম্মত সিলেবাস ও কারিকুলাম আধুনিক বিশ্বের আদলে প্রণয়ন করা।

৩. উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) পদে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ আবেদন করতে পারবে না। এ পদ সংরক্ষিত করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা ছাত্রদের ন্যূনতম দশম গ্রেডের বেসিক অর্থাৎ ১৬ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে।

৪. কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিটি প্রকাশ করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, উপ-পরিচালক, অধ্যক্ষ ও দায়িত্বে থাকা সকল পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবলকে দায়িত্ব/নিয়োগ দেওয়া।

৫. কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত সকল নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন এবং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল সকল শূন্য পদে পলিটেকনিক ও টিএসসিতে দক্ষ শিক্ষক ও দক্ষ ল্যাব সহকারীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।

৬. ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক বিশ্বের আদলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার গেজেট পাস করতে হবে। বর্তমানে প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নড়াইল, খাগড়াছড়ি) শতভাগ সিট নিশ্চিত করা।

দাবিগুলো পূরণ করা হলে পরবর্তীতে আর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে না বলে জানান পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা।

Related Posts শিক্ষা

Leave a Comment

Comments 0