গাজীপুর প্রতিনিধি: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে তাবলিগ জামাত আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিনে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশে কোরআন-হাদিসের আলোকে বয়ান চলছে। বিশেষ করে ইজতেমার প্রথম দিন পবিত্র শবে বরাত হওয়ায় ময়দানের মুসল্লিরা সারারাত ইবাদত বন্দেগিতে কাটিয়েছেন। আজ আসরের পর যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হবে।
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এরই মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতে শরিক হবেন মুসল্লিরা। মোনাজাতের আগ পর্যন্ত এ ঢল অব্যাহত থাকবে।
দু’দিন ধরে সার্বক্ষণিক ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রয়েছেন মুসল্লিরা। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ঈমান, আমল, আখলাক ও দ্বিনের পথে মেহনতের ওপর আমবয়ান অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাবলিগের ছয় উসুলের (মৌলিক বিষয়ে) ওপর শনিবার বাদ ফজর ভারতের হযরত মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদের বয়ানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের বয়ান শুরু হয়। বয়ানের বাংলা অনুবাদ করেন মাওলানা ওসামা ইসলাম। বাদ জোহর বয়ান করবেন সৌদি আরবের মাওলানা। তার বয়ান তরজমা করবেন মাওলানা মোস্তফা খলিল। বাদ আসর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা মঞ্জুর (নিজামউদ্দিন)। তার বয়ান তরজমা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা রুহুল আমিন। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন মাওলানা সাদের ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিনই জর্ডান, লিবিয়া, আফ্রিকা, লেবানন, আফগানিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৪৯টি দেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার মুসল্লি আসেন। ভাষাভাষি ও মহাদেশ অনুসারে ময়দানে চার তাবুতে রয়েছেন মেহমানরা। এর মধ্যে রয়েছে ইংরেজি খিমা, উর্দু খিমা, আরবি খিমা ও বাংলা খিমা।
বিশ্ব ইজতেমায় আগত দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা দিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও মুসল্লিদের ফ্রি স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ১২টি মেডিকেল টিম, ছয়টি বিশেষায়িত মেডিকেল টিম, কন্ট্রোল রুম, একটি স্বাস্থ্য শিক্ষা টিম, রেডিওলজি, প্যাথলজি, ফার্মাসিস্ট টিম ও ১১টি স্যানেটারি ইন্সপেক্টর টিম গঠন করা হয়েছে।
১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমা আয়োজন করা হয়। ১৯৬৬ সালে গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমান ময়দানে স্থানান্তর করা হয় বিশ্ব ইজতেমা।
এ বছর শুরায়ি নেজাত তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের আয়োজনে ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়। মাঝে আট দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাযের অনুসারী (মাওলানা সাদপন্থি) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিয়েছেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
জেবি