বাংলাফ্লো প্রতিবেদক
ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গড়ে ওঠা পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে নেশাদ্রব্য খাইয়ে তরুণীকে অপ্রকৃতিস্থ করে নিয়ে যায় আবাসিক হোটেলে। সেখানে আরেক বন্ধুসহ তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে ও মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে তরুণীকে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তেজগাঁও থানায় দলবদ্ধ ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। এই মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন, মো. হাসিব চৌধুরী (২৭) ও আতিক হোসেন ভূঁইয়া (২৯)।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও, পেনড্রাইভ, ল্যাপটপ ও একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল ফোনে পাওয়া যায় একাধিক নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণও।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকা ও চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, এক মাস আগে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে ভিকটিমের সঙ্গে পরিচয় হয় হাসিব চৌধুরীর। পরিচয় থেকে তাদের সম্পর্ক গড়ায় বন্ধুত্বে। গত ৪ এপ্রিল হাসিব তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে করে ভুক্তভোগীকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। প্রাইভেটকারে তাদের সঙ্গে হাসিবের বন্ধু আতিকও ছিল। এরপর তারা বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে রাত সাড়ে ৯টায় বাসার উদ্দেশে রওনা করে।
তালেবুর রহমান বলেন, পথিমধ্যে আসামিরা ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক কোমল পানীয়র সঙ্গে মদ মিশিয়ে পান করায়। ফলে ভুক্তভোগী কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়ে। এরপর আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে পূর্ব থেকে ভাড়া করা তেজগাঁও থানাধীন শাহীনবাগ ইম্পেরিয়াল হোটেলের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তারা ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক আটকে রেখে সারারাত সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে।
পরদিন সকালে তারা ভুক্তভোগীকে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে ফেলে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তেজগাঁও থানায় দলবদ্ধ ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়-জানান তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশের চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে গত ৬ এপ্রিল ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকা হতে আতিক হোসেন ভূঁইয়াকে ও ৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকা হতে হাসিব চৌধুরীকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, তাদেরকে আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করে। তাদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে আতিক হোসেন ভূঁইয়ার কাছ থেকে ধর্ষণের সময় তার মোবাইল ফোনে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও, পেনড্রাইভ, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মূল আসামি হাসিব চৌধুরী দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0