শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ত্রয়োদশ নির্বাচন: ব্যালটসহ অন্যান্য মুদ্রনকাজে কাগজ লাগবে ২ লাখ ৩০ হাজার রিম

ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনে ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, ৫ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকাসহ অনেক কিছু মুদ্রণ করতে হয়।

ফাইল ছবি

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপানোসহ অন্যান্য মুদ্রণকাজে দুই লাখ ৩০ হাজার রিম কাগজ লাগবে। এতে ব্যয় ধরা হয়ে হয়েছে সাড়ে ৩৫ কোটি টাকার বেশি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) থেকে এ চাহিদা দেওয়া হয়েছে।

এ দিন ভোটের সামগ্রী চাহিদা নিরূপণ, সম্ভাব্য বাজেট ও মজুদ যাচাই নিয়ে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

বৈঠক শেষে নির্বাচন ভবনে বৈঠক শেষে ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, নির্বাচন প্রস্তুতি যেন পিছিয়ে না থাকে সেজন্যে কাজগুলো গুছিয়ে রাখা হচ্ছে।

সচিব বলেন, মূলত পেপার প্রকিউরমেন্ট থেকে প্রিন্টিং পর্যন্ত সময়সীমা কতটুকু লাগে। উনারা বলেছেন যে, তিন মাস থেকে চার মাস সময় লাগে। যেভাবে ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশন হবে সেভাবে (এগোবে)। নির্বাচনের তারিখ বা নির্বাচনের সিডিউল সম্পর্কে যে সিদ্ধান্তটা হবে; তখন যেন আমাদের ব্যাকওয়ার্ড ক্যালকুলেশনটা থাকে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনে ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, ৫ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকাসহ অনেক কিছু মুদ্রণ করতে হয়।

মঙ্গলবার সভার আলোচনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আসন্ন নির্বাচনে কাগজ কী পরিমাণ লাগে সে সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, এ সংক্রান্ত বাজেটের সংস্থানের ব্যাপার এবং আগের নির্বাচনের কিছু কাগজপত্র বিজিপ্রেসে রয়েছে সেগুলোর গুণগত মান নষ্ট হয়ে থাকলে ডিসপোজালের ব্যবস্থা করা (নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে)।

এ বৈঠকে ইসি কর্মকর্তার পাশাপাশি বিজিপ্রেসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজটির বিষয়ে অগ্রগতি নিতে একটি কমিটিও করে দিয়েছে ইসি সচিবালয়।

সচিব বলেন, আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছি। তারা যাচাই বাছাই করবে, যে কাগজগুলো নষ্ট হয়েছে গিয়েছে সেগুলোর প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ডিসপোজাল করা হবে। কাগজের পরিমাণ কতটুকু ও কতদিন টাইম লাগতে পারে সে বিষয়ে নিজেদেরকে প্রস্তুতি রাখার জন্যে এ আলোচনা করা হয়েছে।

লিড টাইম হিসেবে মোটামামুটি তিন মাস সময় লাগে বলে সভায় জানানো হয়েছে।

সচিব বলেন, সে সাথে আরও একটি ফ্লেক্সিবিলিটি যদি রাখে চার মাসের ভেতরে আমরা সবগুলো প্রকিউমেন্ট করতে পারব।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আরও কয়েকটি বৈঠকের পর বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব (ইসি) আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, বিজি প্রেসের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে, ব্যালট পেপারসহ সব মুদ্রণকাজ সম্পন্ন করতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। আমরা বলেছি, চার মাস সময় নেন। এক্ষেত্রে তারা সবকিছু হিসাব-নিকাশ করে পরবর্তী বৈঠকে আমাদের জানাবেন।

কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত ডিসেম্বরকে টার্গেট করেই কাগজ কেনা হবে। এক্ষেত্রে তফসিলের আগেই কাগজ কেনা সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। কেননা, তফসিলের আগেই বেশ কিছু মুদ্রণ সম্পন্ন করতে হয়।

আলোচনার পর ইসি সচিব তাদের চার মাস সময় দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আগামী মে মাস থেকেই কাগজ কেনার কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নির্বাচন উপলক্ষে এক লাখ ৬১ হাজার ৭৪ রিম কাগজ ক্রয় করা হয়েছিল। আগামীতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে দুই লাখ ৩০ হাজার রিম কাগজের প্রয়োজন হবে।

বর্তমানে এক লাখ ৬৯ হাজার রিম কাগজ মজুদ রয়েছে। বাকিগুলো কিনতে হবে। এজন্য ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫২৩ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কাগজ কেনাকাটা ও মুদ্রণের কাজ ভোটের আগে তিন থেকে চার মাসের মধ্যে করার প্রস্তুতি রাখছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0