Logo

তামাকের ব্যবহার ১৩ বছরে আপেক্ষিক হ্রাস পেলেও নিয়ন্ত্রণের গতি চ্যালেঞ্জিং

বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তামাক নিয়ন্ত্রণের গতি দ্বিগুণ করার পরামর্শ গবেষকদের।

গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানের ছবি

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা :  ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের পরিমাণ ৫৪ শতাংশ থেকে ৪৭ শতাংশে নেমে এসেছে— বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

তামাক ব্যবহার হ্রাস হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে তামাক ব্যবহারের হার হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ চ্যালেঞ্জি বলে মন্তব্য করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে ‘বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ও পূর্বাভাস’ শীর্ষক এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে গবেষকরা এসব কথা বলেছেন। একই সঙ্গে এই বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তামাক নিয়ন্ত্রণের গতি দ্বিগুণ করার পরামর্শ দিয়েছে গবেষকদল।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমইউ জার্নালের নির্বাহী সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এম মোস্তফা জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশাল মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক।

গবেষণায় উঠে এসেছে, ২৫-৬৯ বছর বয়সী বাংলাদেশিদের তামাক ব্যবহার (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ২০০৯ সালে ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে ৪৭ শতাংশে নেমেছে। অর্থাৎ ১৩ শতাংশ আপেক্ষিক হ্রাস ঘটেছে। এর মধ্যে ধূমপানের হার ২৭ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২২ শতাংশ, যেখানে আপেক্ষিক হ্রাস ১৯ শতাংশ। আর ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার ৩৬ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ কমেছে, এক্ষেত্রে আপেক্ষিক হ্রাস ১৪ শতাংশ।

গবেষনারলিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুরুষের তামাক ব্যবহারের হ্রাস নারীর তুলনায় বেশি পাওয়া গেছে। এছাড়া গ্রামীণ এলাকায় তামাক ব্যবহার কমলেও শহরে হ্রাসের হার বেশি স্পষ্ট।

গবেষণায় ২০০৯-২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমান হারে তামাক ব্যবহার কমলে ২০৩০ সালে এই হার দাঁড়াবে প্রায় ৪২ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ৩০ শতাংশে কমানোর যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বর্তমান নীতিমালার গতি দ্বিগুণ করতে হবে।

গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তামাক ব্যবহার বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গণমানুষকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারে তরুণরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তামাক ব্যবহারের মাত্রা ও ঝুঁকি শহর ও গ্রাম পর্যায়ে আলাদাভাবে তুলে ধরা জরুরি। বিভিন্ন কমিউনিটির মধ্যে তামাকের ব্যবহার কেমন তাও তুলে ধরা দরকার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য) মো. মামুনুর রশিদ প্রমুখ ।

বাংলাফ্লো/এসএস


Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0