ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তান এই দুটি দুই এশীয় প্রতিবেশীকে নিয়ন্ত্রণ করে না এবং তাদের মধ্যে চলমান যুদ্ধ মোটেও ‘আমাদের দেখার বিষয় নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।
বৃহস্পতিবার ( ৮ মে) ফক্স নিউজের ‘দ্য স্টোরি উইথ মার্থা ম্যাককালাম’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স এমন কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স বলেন, আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব পাক-ভারত উত্তেজনা কমে যাক। যদিও আমরা এই দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।আমরা যেটা করতে পারি তা হলো উত্তেজনা কমাতে তাদেরকে খানিকটা উৎসাহিত করার চেষ্টা করতে পারি।
ভ্যান্স আরও বলেন, আমরা একটা যুদ্ধের মাঝখানে গিয়ে জড়িয়ে পড়তে পারি না, কার্যত যেটা আমাদের দেখারই বিষয় নয় এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণক্ষমতার বাইরে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আশা ও প্রত্যাশা হলো, এটি যেন বিস্তৃত আঞ্চলিক যুদ্ধ না হয়ে যায় বা ঈশ্বর না করুক, পারমাণবিক সংঘাতে পরিণত না হয়।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ;আমাদের দেখার বিষয় নয়’ বললেও সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে ওয়াশিংট নিয়মিত ভারত ও পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবারও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফোনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে উভয় দেশকে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে ও সরাসরি সংলাপে বসতে আহ্বান জানান।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে ‘লজ্জাজনক’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। পাল্টাপাল্টি হামলার পর দুই দেশ এখন থামবে বলে বুধবার তিনি আশাও প্রকাশ করেছিলেন।
এদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ওয়াশিংটনের যে লক্ষ্য তাতে ভারত তাদের এই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ওদিকে পাকিস্তানকে এখনও যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র হিসেবেই দেখে। যদিও ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে ওয়াশিংটন সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকেই ইসলামাবাদের গুরুত্ব অনেকটাই কমে এসেছে।
বিশ্লেষকদের পাশাপাশি সাবেক কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মূল নজর এখন ইউক্রেইন-রাশিয়া ও গাজা যুদ্ধ থেকে কূটনৈতিক লক্ষ্য হাসিল করা। যে কারণে তারা ভারত ও পাকিস্তানকে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে সরকারিভাবে কোনো ধরনের চাপ দিচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদ একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে। দুই দেশের মধ্যে দুই দিনের সংঘাতে এ পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত লোকের প্রাণহানি ঘটেছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। নয়া দিল্লি এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করলেও পাকিস্তান তা বরাবরেই মতো অস্বীকার করে পেহেলগামে হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে।
সঙ্কটে ‘দায়িত্বশীল সমাধান’ খুঁজে নিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই দেশকে একসঙ্গে কাজ করারও আহ্বান জানিয়েছিল।
বাংলাফ্লো/এসএস
Comments 0