ক্রীড়া প্রতিবেদক
সাভারের বিকেএসপিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচ খেলতে নেমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর তাঁকে পাশেই কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা যায়, অল্প সময়ের মধ্যেই দুইবার হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। জরুরি অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর হার্টে রিং পরানো হয়েছে। এমন অবস্থায় তামিমের অসুস্থতার খবরে তার পাশে থাকতে না পারার আক্ষেপ মাশরাফি বিন মর্তুজার।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে পঞ্চপান্ডবের অন্যতম দুইজন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও তামিম ইকবাল। লম্বা সময় তামিমের সঙ্গে জাতীয় দলের ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছেন তারা। বয়সে বড় মাশরাফির সঙ্গে তামিমের সম্পর্কটা ভাই-বন্ধুর মতোই! আর তাই তামিম অসুস্থ হওয়ায় উদ্বিগ্ন মাশরাফি।
তামিমের সুস্থতা কামনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন মাশরাফি।
পোস্টে তিনি লিখেন, তোর কাছে যাইতে পারলাম না ভাডি। মহান আল্লাহ তোর সহায় হোন। দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আয়, ইনশাল্লাহ।
এদিকে, তামিমের পেজ থেকেও এডমিনের বরাতে একটি পোস্টে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়, ‘সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় বিষয়টি দ্রুত দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা মনে হওয়ায় তিনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ গ্রহণ করেন। তবে কিছুক্ষণ পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে নিকটতম হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে তিনি বিকেএসপিতে ফিরে আসেন।'
'এরপর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়। দলের (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব) ম্যানেজার শিপন ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লে তাকে ফের নিকটতম কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে।'
'চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয় এবং রিং পরানো হয়। বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (CCU) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার সুস্থতার জন্য সবার দোয়া কামনা করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।’
এদিকে, তামিমের চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের রাজিব বলেছেন, ‘যত ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, সবকিছু করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে কন্ডিশনটা অনুকূলে আছে। ওনার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। এটার জন্য একটা অ্যানজিওগ্রাম, অ্যানজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্ট করা হয়েছে। এটা খুব স্মুথলি এবং এফিশিয়েন্টলি হয়েছে। ওনার এই ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে এখন।’
তবে এখনো পুরোপুরি জটিলতা কাটেনি বলে জানান ডা. রাজিব, ‘একটু ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে ছিল। স্টেন্ট বসানোর পর তিনি অবজারভেশনে আছেন। ক্রিটিক্যাল কন্ডিশন এখনো কাটেনি, একটু সময় লাগবে।’
তবে সবার কাছে দোয়া চেয়ে তামিমকে নিয়ে আশার কথাও শুনিয়েছেন চিকিৎসক, ‘আমরা আশাবাদী তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারবেন।’
এর আগে, সোমবার (২৪ মার্চ) সকালে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে সকালে শাইনপুকুরের বিপক্ষে টস করেন মোহামেডানের অধিনায়ক তামিম। এরপর অসুস্থ অনুভব করলে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে আনলে ব্লক ধরা পড়ে। কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট মনিরুজ্জামান মারুফের তত্ত্বাবধানে তাঁর ব্লক সরানো হয়।
Comments 0