ডেস্ক রিপোর্ট: কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন? বর্তমানে ওই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহে এই প্রশ্নই উঠে আসতে শুরু করেছে। কানাডায় ট্রুডোর একদা ‘বন্ধু’ বলে পরিচিত রাজনৈতিক শিবির নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও (এনডিপি) সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে। ট্রুডোর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এনডিপির নেতা জগমিত সিংহ। আগামী বছরের ২৭ জানুয়ারি কানাডার পার্লামেন্ট বসছে। সেই সময়েই এই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে। কানাডার পার্লামেন্টের হাউস অফ কমনসে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই ট্রুডোর লিবারেল পার্টির। সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে অন্য দলের সমর্থন প্রয়োজন তাদের। হাউস অফ কমন্সে মোট জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ৩৩৮। কিন্তু লিবারেলের রয়েছে ১৫৩ আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার কারণে এনডিপির সাহায্য নিতে হয় তাদের। হাউস অফ কমন্সে এনডিপির রয়েছে ২৫ জন জনপ্রতিনিধি। ফলে সেই সমর্থন না পেলে ট্রুডোর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন অনেকে। সেপ্টেম্বর মাসেই ট্রুডোর দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে এনডিপির। এ বার এনডিপি নেতা জগমিত আনুষ্ঠানিক ভাবে ট্রুডোর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা বলছেন। সোস্যালমিডিয়ায় এনডিপি নেতা লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হল সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা, ক্ষমতাবানদের জন্য নয়। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রুডো।” ট্রুডোর সরকারকে ভেঙে দিয়ে কানাডাবাসীকে নতুন সরকার বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় বাকি বিরোধী দলগুলি জগমিতের সঙ্গে সায় দিলে ভেঙে যেতে পারে কানাডায় ট্রুডোর সরকার। সরকারের মেয়াদ পূরণের আগেই হতে পারে নির্বাচন। সম্প্রতি কানাডার শাসক শিবির লিবারেল পার্টির অন্দরেও ট্রুডোর ইস্তফার দাবি উঠে আসতে শুরু করেছে। বেশ কয়েক দিন ধরেই দেশের নানাবিধ সমস্যার কারণে কোণঠাসা কানাডার প্রধানমন্ত্রী। দেশের আর্থিক ঘাটতি নিয়ে চাপে রয়েছেন তিনি। সে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রায় ৬০ জন সাংসদ ইতিমধ্যে ট্রুডোর বিরোধিতা শুরু করেছেন। এই অস্থির আবহের মাঝে ট্রুডোকে কাঠগড়ায় তুলে কানাডার অর্থমন্ত্রী তথা উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। এই বিতর্কের আবহে শুক্রবার নিজের মন্ত্রিসভাতেও রদবদল করে ফেলেছেন ট্রুডো। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, মন্ত্রিসভায় অভিজ্ঞ সদস্যদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বদলে ফেলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।