স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: ভারতের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। স্থল সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা তো ঘটেছেই, আকাশপথ আর সমুদ্রবন্দরেও একে অপরকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পারমানবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ দুই দেশ। দুই দেশের এমন উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে এবার সুনীল গাভাস্কারের মন্তব্যে চটেছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহণ ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) নিয়ে ভারতীয় কিংবদন্তি গাভাস্কার যা বলেছেন, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তান কিংবদন্তি মিয়াঁদাদ। গাভাস্কারের ভাবনার সমালোচনা করেছেন ইকবাল কাশিম আর বাসিত আলীও।
গাভাস্কার সম্প্রতি স্পোর্টস টুডেকে বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক যেদিকে যাচ্ছে, তাতে সেপ্টেম্বরে হতে যাওয়া এশিয়া কাপে পাকিস্তান থাকবে বলে তিনি মনে করেন না, ‘ভারত সরকার যা বলে বিসিসিআই তা–ই করে। এশিয়া কাপের বেলায় ভিন্ন কিছু হওয়ার কথা নয়। এবার তো ভারত, শ্রীলঙ্কা যৌথ আয়োজক। দেখার বিষয় (ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক) পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় কি না। যদি না হয়, আমি পাকিস্তানকে এশিয়া কাপে দেখছি না।’
গাভাস্কার মনে করেন, ভারত–পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতির জেরে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল ভেঙেও যেতে পারে। আর সেটা হলে তিনি একটুও অবাক হবেন না জানিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতির একটি চিত্রও তুলে ধরেছেন, ‘এমনও হতে পারে ভারত এসিসি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেবে। এরপর ভারতে একটা চার জাতির বা পাঁচ জাতির টুর্নামেন্ট হবে। যেখানে থাকবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান। আবার টুর্নামেন্টটি বাংলাদেশেও হতে পারে, শ্রীলঙ্কায়ও হতে পারে। তবে ভারতই বেশি আয়োজন করবে।’
গাভাস্কারের এসব কথা পাকিস্তানের কারও ভালো লাগার কথা নয়। তবে ভালো–খারাপ ছাড়িয়েও মিয়াঁদাদের অনুভূতি অবিশ্বাসের। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে গাভাস্কারকে চেনেন, তাঁর চিন্তাধারা সম্পর্কে জানেন। সেই গাভাস্কারের মুখে এসব কথা ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না পাকিস্তান ক্রিকেটের ‘বড়ে মিয়া’র। গাভাস্কারকে সানি ভাই সম্বোধন করে টেলিকম এশিয়াকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় মিয়াঁদাদ বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না সানি ভাই এসব কথা বলেছেন। পাকিস্তানের যে কারও চেয়ে আমি তাঁকে ভালো করে চিনি। পাকিস্তানকে তিনি যথেষ্ট সম্মান করেন। তিনি এসব কথা বলতে পারেন না।’
গাভাস্কার টেস্টে শেষবার যাঁর বলে আউট হয়েছিলেন (১৯৮৭ সালে), সেই ইকবাল কাশিমও ভারতীয় কিংবদন্তির কথা শুনে বিস্মিত, ‘গাভাস্কার একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব, যাঁকে সীমান্তের দুই পাশের মানুষই ভালোবাসে। রাজনীতিকে খেলাধুলার সঙ্গে মেশানো উচিত নয়। এশিয়া কাপে এশিয়ার সব দল খেলে। তিনি পাকিস্তানকে ছাড়া এশিয়া কাপের কথা কীভাবে বলেন।’
পাকিস্তানের আরেক সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী অবশ্য কাশিম বা মিয়াঁদাদের মতো অবিশ্বাস বা বিস্ময়ের সুরে কথা বলেননি। আক্রমণাত্মক ও বিস্ফোরক মন্তব্যের জন্য প্রায়ই আলোচিত হওয়া এই সাবেক ক্রিকেটার গাভাস্কারের কথাকে ‘ষ্টুপিড’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। পেহেলগামের ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী হলে তার প্রমাণ চান বাসিত, ‘আমি এটাকে স্টুপিড বক্তব্য বলব। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কীভাবে পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেন? আগে প্রমাণ দিন। ক্রিকেট কিংবদন্তি এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের ক্রিকেট নিয়েই কথা বলা উচিত, রাজনীতি নয়।’
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0