Logo

চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালে যে ৪টি বিষয় হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ

প্রথম ম্যাচে আজ (মঙ্গলবার, ৬মে) রাতে সানসিরোতে নিজেদের মাঠে খেলতে নামবে ইন্টার মিলান। প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে বার্সেলোনা। আর অন্যদিকে আগামীকালের (বুধবার, ৭ মে) পিএসজির মাঠে তাদের বিপক্ষে নামবে আর্সেনাল।

চ্যাম্পিয়ন্স লীগ

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: শুরু হতে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালে চারটি দলের দ্বিতীয় লেগের লড়াই। প্রথম ম্যাচে আজ (মঙ্গলবার, ৬মে) রাতে সানসিরোতে নিজেদের মাঠে খেলতে নামবে ইন্টার মিলান। প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে বার্সেলোনা। আর অন্যদিকে আগামীকালের (বুধবার, ৭ মে) পিএসজির মাঠে তাদের বিপক্ষে নামবে আর্সেনাল।

এবারের চ্যাম্পিয়নস লীগের প্রথম সেমিফাইনালে ডেম্বেলের একমাত্র গোলে এমিরেটসে নিজেদের মাঠেই হারতে হয় আর্সেনালকে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত খেললেও নাজারুজ্জি বলে খ্যাত ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করে বার্সেলোনা।

আর তাই চ্যাম্পিয়নস লীগের দ্বিতীয় লেগে এই দুই ম্যাচে চারটি বিষয় হয়ে উঠতে পারে গুরুত্বপূর্ণ যার উপর নির্ভর করবে ফাইনালে খেলবে কোন দুই দল।

সবার নজর থাকবে ইন্টার মিলানের দুর্গের দিকে

যদি বলা হয় চ্যাম্পিয়নস লীগের কোন সেমিফাইনাল নিয়ে সবচাইতে বেশি আলোচনা? — তবে নিঃসন্দেহে সবাই বলবে ইন্টার মিলান বনাম বার্সেলোনা ম্যাচটি। যাকে বলা হচ্ছে ম্যাচ অফ দ্যা উইক সেখানে থাকবে সবার নজর। সিনেমার বক্স অফিস হিটের মতো বিষয় না থাকলেও প্রথম লেগের ম্যাচের পরে সবার আকর্ষণও এই ম্যাচ ঘিরে।

আর হবেই না বা কেনো? প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ০-২ গোলে পিছিয়ে সমতা ফিরিয়ে আনে বার্সেলোনা। এরপরে আবার ২-৩ গোলে পিছিয়ে গেলেও ৩-৩ গোলে সমতা ফিরিয়ে আনে বার্সেলোনা। এই ম্যাচকে চলতি মৌসুমের সেরা একটা ম্যাচ হিসেবেও দেখছে অনেক ফুটবল বোদ্ধা।

এবার খেলা হবে সানসিরোতে যেখানে এখন পর্যন্ত হারে নি ইন্টার মিলান। এই মাঠে চ্যাম্পিয়নস লীগের শেষ ১৫ ম্যাচে হারের স্বাদ নিতে হয় নি মার্টিনেজ বাহিনীর। তার উপর তিনবারের চ্যাম্পিয়নস লীগ বিজয়ী ইন্টার মিলান কখনো হারে নি চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের খেলায়।

তার উপর সানসিরোতে নিকট অতীতে খুব একটা বেশি ভালো ইতিহাস না বার্সেলোনার।

চ্যাম্পিয়নস লীগের ইতিহাসে শুধুমাত্র তিন বার দুই লেগের খেলা মিলিয়ে ১০ গোলের বেশি স্কোর হয়েছে। তবে এই ম্যাচে সেই ইতিহাস আবার লেখার সম্ভাবনা দেখছেন ফুটবল বোদ্ধারা।

আর তার কারণ হিসেবে অবশ্যই যে নামটি সামনে আসবে তা হলো বর্তমান বিশ্বের ফুটবল বিস্ময় বালক লামিন ইয়ামাল ও রাফিনহাদের নিয়ে বার্সেলোনার দুর্দান্ত আক্রমণ ভাগের ফর্ম।

আর তাই এই ম্যাচে নতুন রেকর্ড যদি হয় তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

২—হবে কী এটা পিএসজি’র বছর?

প্যারিস সেন্ট জার্মেইন —ভক্তদের কাছে দীর্ঘ এক আক্ষেপের নাম এই ক্লাব। ধনকুবের খেলাইফির মালিকানাধীন ক্লাবটি দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা জয়ের জন্য। কিন্তু ফাইনালে পৌঁছালেও সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে তাদের।

ঘরোয়া লীগের দুর্দান্ত ফলাফল দেখানো ক্লাবটির সামনে আছে এবারের চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ের সুযোগ। ইতোমধ্যে আর্সেনালকে প্রথম লেগে ০-১ গোলে হারিয়ে নিজেদের মাঠে তাদের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে খেলবে লুইস এনরিকের দল।

এমবাপ্পে যাওয়ার পরে বদলে গেছে পিএসজি। সব সময় অন্যতম ফেভারিট তকমা থাকলেও নক আউট পর্বে মুখ থুবড়ে পড়া পিএসজি এবার যথেষ্ট গোছানো একটি দল। সেমিফাইনালে পৌঁছার আগে হারিয়েছে এবারের ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ জয়ী লিভারপুলকেও।

তরুণদের দুর্দান্ত প্রদর্শনীর পাশাপাশি অভিজ্ঞ ডিফেন্স লাইনআপ ও ডেম্বেলেদের গতির ঝড় নিয়ে তৈরি হওয়ার আক্রমণভাগও আছে ফর্মে।

ঘরের মাঠে শেষ চার চ্যাম্পিয়নস লীগের ম্যাচে তিনটাতেই জিতেছে পিএসজি। এই সময়ে তারা প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়েছে ১৪ টি গোল।

সব মিলিয়ে ২০২০ সালের পরে ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে। আর যদি শিরোপার ছোঁয়া পেয়ে যায় তবে বছরটি হয়ে উঠতে পারে পিএসজিময়।

৩— যে খেলোয়াড়ের উপর থাকবে সবার নজর

এবারের চ্যাম্পিয়নস লীগে এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত ফর্মে আছে বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনহা। ইন্টার মিলানকে হারাতে হলে রাফিনহার দিকে চোখ রাখতেই পারে বার্সা ভক্তরা।

আর এর অন্যতম কারণ — চলতি মৌসুমে যখনই প্রয়োজন হয়েছে তখনই ত্রাতা হয়ে বার্সেলোনাকে রক্ষা করেছেন রাফিনহা।

এবারের চ্যাম্পিয়নস লীগে এখন পর্যন্ত আটটি অ্যাসিস্ট ও ১২ টি গোল করেছে রাফিনহা। চ্যাম্পিয়নস লীগের ইতিহাসে শুধুমাত্র ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এর চাইতে বেশি গোল ইনভলবমেন্ট আছে যার সংখ্যা ২১। ২০১৩-১৪ মৌসুমে রোনালদো এই রেকর্ড গড়ে।

আরেকটি রেকর্ডের হাতছানিও অবশ্য আছে রাফিনহার সামনে। বার্সেলোনার জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লীগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৯টি অ্যাসিস্ট করার রেকর্ড লুইস ফিগোর। যা ভাঙতে রাফিনহার লাগবে আর একটি মাত্র অ্যাসিস্ট।

আর যদি ইন্টার মিলানের বিপক্ষে সেই অ্যাসিস্ট বা গোল করে দলকে ফাইনালে তুলে নেয় রাফিনহা তবে নিশ্চিতভাবে এবারের ব্যালন ডি অরের দৌড়েও এগিয়ে থাকবে ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। একইসঙ্গে ব্রাজিলের খেলোয়াড় হিসেবে অনেক দিন পরে একজন খেলোয়াড়ের হাতেও উঠতে পারে ব্যালন ডি অর।

৪—আর্সেনাল কী পারবে ফাইনালে পৌছাতে?

সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে খুব একটা বেশি ভালো ফলাফলের রেকর্ড নেই আর্সেনালের। আর তাই মিকেল আর্তেতার দলকে ফাইনালে পৌঁছাতে হলে ভাঙতে হবে সেই রেকর্ড। শুধুমাত্র তবেই সম্ভব ১৬ বছর পরে ফাইনালে পৌঁছানো।

ঘরের মাঠে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হেরে চ্যাম্পিয়নস লীগে মাত্র দুটি দল ফাইনালে উঠেছে - ১৯৯৬ সালে আয়াক্স এবং ২০১৯ সালে টটেনহ্যাম হটস্পার।

তবে উভয় দলই ফাইনালে হেরেছে।

এখন দেখার বিষয় — আর্সেনাল কী পারবে সেই ধারা ভাঙতে?

বাংলাফ্লো/এসও

Related Posts খেলা

Leave a Comment

Comments 0