Logo

সংকট কাটাতে বিসিবি কি সাকিবকে ফেরাবে?

বছর ঘুরে গেলেও ৩৮ বছর বয়সী এই সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যেন বিসিবির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। যতবার বাংলাদেশ দল মাঠে নামে, ততবারই ক্রিকেট বোর্ডের অলিন্দে ঘুরে ফিরে আসে একটি প্রশ্ন—সাকিব কি আবার ফিরবেন?

ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবশেষ খেলেছেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের কানপুরে। চোখের সমস্যায় ভুগছেন ২০২৩ সাল থেকেই, যার প্রভাব পড়েছে ব্যাটিংয়ে। প্রায় ছয় মাস বিরতির পর পাকিস্তান সুপার লিগে ফিরে শুরু করেছেন আবার পেশাদার ক্রিকেট। এই সব তথ্য শুনই যার নাম মনে পড়ে যায়, তিনি আর কেউ নন সাকিব আল হাসান।

বছর ঘুরে গেলেও ৩৮ বছর বয়সী এই সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যেন বিসিবির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। যতবার বাংলাদেশ দল মাঠে নামে, ততবারই ক্রিকেট বোর্ডের অলিন্দে ঘুরে ফিরে আসে একটি প্রশ্ন—সাকিব কি আবার ফিরবেন?

এমন প্রশ্নের পেছনে বড় কারণ জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একের পর এক ব্যর্থতা—দেশে টেস্ট হেরে বসেছে জিম্বাবুয়ের কাছে, টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে, পাকিস্তানের তরুণ দলের কাছেও হার মানতে হয়েছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়েও হয়েছে অবনমন।

মাঠের ভেতরেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে—এই দলে নেই কোনো বড় ভাইয়ের উপস্থিতি, যিনি শুধু নিজের অভিজ্ঞতা নয়, মানসিক দৃঢ়তাও ছড়িয়ে দিতে পারেন বাকিদের মাঝে। এমন একজনের অভাবই যেন সবচেয়ে বেশি ভুগিয়ে দিচ্ছে দলকে। এবং অনেকের চোখে সেই অভাব পূরণ করতে পারেন সাকিবই।

বিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, 'এই দল ভবিষ্যতে ভালো করতে পারে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তারা যেন ডানাহীন পাখি। শাকিব সেই ডানা হতে পারে।'

বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এখনকার সাকিব আর হয়তো এক দশক আগের মতো পারফরমার নন। কিন্তু এখনো তার অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য অস্বীকার করার উপায় নেই। টি-টোয়েন্টিতে চার ওভার কিংবা ওয়ানডেতে দশ ওভার নির্ভরযোগ্যভাবে বল করতে পারেন। সাত নম্বরে ব্যাট হাতেও কিছু অবদান রাখতে পারেন। বল হাতে কার্যকর এবং ব্যাট হাতে দরকারি ইনিংস খেলার সক্ষমতা এখনো রয়ে গেছে।

সম্প্রতি দলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সময় কাটিয়েছেন সাকিব। এক ক্রিকেটার বলেন, 'তিনি বেশ হাসিখুশি ছিলেন, আমাদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, এখনও বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে খেলতে পারেন।'

তবে এখানেই প্রশ্ন—সাকিব নিজে কি চান ফিরতে? কিংবা সুযোগ পেলেও তিনি আদৌ ফিরতে পারবেন কি?

সূত্র জানায়, যতবারই সাকিবের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন নিয়ে নির্বাচক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়, বিসিবির শীর্ষপর্যায়ের এক পরিচালক তাতে আপত্তি তুলেন। অনেকে মনে করেন, এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক কারণ। জুলাই অভভুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সাকিবের ফেরা হয়তো এখনকার বাস্তবতায় সহজ নয়।

তবু সব কিছুর মাঝেও আলোচনা আবার জোরাল হচ্ছে। চলতি মাসের শ্রীলঙ্কা সফরে—যেখানে দুইটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ—সেখানে সাকিবকে ফেরানোর প্রস্তাব উঠেছে আবারও। যদিও এখনো তা অনানুষ্ঠানিক পর্যায়েই রয়ে গেছে।

শেষ পর্যন্ত সাকিব ফেরেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এই সংকটকালে দল যে এখনো তাকিয়ে আছে তার দিকে—সেই বাস্তবতা অস্বীকার করার উপায় নেই।

বাংলাফ্লো/এসও

Related Posts খেলা

Leave a Comment

Comments 0