Logo

নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাকে শোকজ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ঘটনায় যুগ্ম সদস্য সচিব ও জেলা ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহমান মেহেদী, যুগ্ম-সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম সহ সদর উপজেলা আহ্বায়ক মো. রাশেদুল ইসলাম মামুনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন সংগঠনটির জেলা ইউনিট।

ছবি: সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

নড়াইল: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ঘটনায় যুগ্ম সদস্য সচিব ও জেলা ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহমান মেহেদী, যুগ্ম-সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম সহ সদর উপজেলা আহ্বায়ক মো. রাশেদুল ইসলাম মামুনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন সংগঠনটির জেলা ইউনিট। নোটিশে আগামী সাত দিনের মধ্যে যৌক্তিক কারণ দেখাতে ব্যর্থ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মুখপাত্র নুসরাত জাহান নোটিশের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলার সদস্য সচিব মো. শাফায়াত উল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক কাজি ইয়াজুর রহমান বাবুর নির্দেশক্রমে জেলা শাখার মুখপাত্র নুসরাত জাহান নোটিশ প্রদান করেন।

নোটিশে বলা হয়, এতদ্দ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ০৯ জুন, ২০২৫ ইং তারিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নড়াইল জেলার কতিপয় নেতাকর্মীর মাঝে ঘটে যাওয়া অভ্যন্তরীণ সাংঘর্ষিক কার্যক্রমের জন্য আমরা অত্যন্ত লজ্জিত এবং শোকাহত। এই সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত মো. আব্দুর রহমান মেহেদী (যুগ্ম সদস্য সচিব ও ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক), আমিরুল ইসলাম (যুগ্ম-সদস্য সচিব)-কে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন বহিষ্কার করা হবেনা এ মর্মে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দেয়া হলো। যদি তারা আগামী ৭ দিনের মধ্যে যৌক্তিক কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হন তবে কেন্দ্রীয় সংগঠন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

এছাড়াও নড়াইল সদর উপজেলা আহ্বায়ক মো. রাশেদুল ইসলাম মামুন এই সংঘর্ষে যুক্ত থাকায় তাকে কেন সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবেনা এ মর্মে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাকেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট কারণ দর্শাতে হবে।

কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী কারণ দর্শানো ব্যাতিরেখে তাকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলো৷ আগামী ৭ দিনের মধ্যে যৌক্তিক কারণ দর্শাতে পারলে পুনরায় তাকে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে। \

যে পোস্ট নিয়ে বাক-বিতণ্ডা:

চলতি মাসের ৬ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নড়াইল জেলার অফিসিয়াল পেইজ থেকে যুগ্ম সদস্য সচিব ও ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. আবদুর রহমান মেহেদী একটি পোস্ট করেন। পোস্টটিতে \বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ, আহত ও নড়াইল জেলার সাধারণ জনগণের প্রতি জেলা প্রশাসককে আরও বেশি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পোস্টটিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ছবিও জুড়ে দেয়া হয়\।

পোস্টটি করার কিছু সময় পর এটি সংগঠনটির যুগ্ম-সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম রানার নজরে আসে। তখন তিনি নিজেই পোস্টটি পেইজ থেকে ডিলিট করে দেন। একইসাথে জেলা প্রশাসকের সমালোচনামূলক এমন পোস্ট করায় আব্দুর রহমান মেহেদীকে তিরস্কার করেন রানা। পরে এ নিয়ে সংগঠনটির মেসেঞ্জার গ্রুপে উভয়ের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়।

পরবর্তী ঘটনা:

ঘটনার দুই দিন পর ৮ জুন সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বিষয়টি মিটমাটের জন্য উভয়কে ডাকেন, তারা কেউই সংগঠনের ডাকে সাড়া দেয়নি। উপরন্তু তারা উভয়ই মেসেঞ্জারে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চালিয়ে যান এবং দুই গ্রুপে মারামারি করার জন্য স্থান ও সময় নির্ধারণ করেন। এর জেরে গত ৯ জুন পুরাতন বাস টার্মিনালে দুই নেতার অনুসারীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে আমিরুল ইসলাম রানা ও সদর উপজেলা আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম মামুনের অনুসারীদের সাথে আব্দুর রহমান মেহেদীর অনুসারীর সংঘর্ষ হয়। এসময় আব্দুর রহমান মেহেদী, রাশেদুল ইসলাম মামুনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন৷

উল্লেখ যে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ৩ দিন পর সংগঠনটি কারণ দর্শাতে নোটিশ করেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

বাংলাফ্লো/এসকে

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0