Logo

শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদুল আজহার জামাত সকাল ৯টায়

ঈদে জামাতের ইমামতি করবেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান।

জেলা প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ: দেশের বৃহত্তম ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। ১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে এবার।

 ঈদে জামাতের ইমামতি করবেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই। নারীদের জন্য সূর্যবালা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সকাল ৮টায় আলাদা জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঐতিহ্য অনুসারে তিন দফায় গুলি ফুটিয়ে জামাত শুরু হবে ঈদের দিন সকাল ৯ টায়।

বুধবার (৪ জুন) শেষবারের মতো মাঠ পরিদর্শন করে নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদ সম্মেলন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান।

এসময় উপস্থিত ছিলোন,  র‍্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মো. আশরাফুল কবির ও ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামেজ উদ্দীন।

ঐতিহ্যবাহী এ মাঠে প্রতিবারই জেলা ছাড়াও সারাদেশ থেকে কয়েক লাখ মুসুল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। ইতিমধ্যে নামাজের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

ঈদ জামাতকে ঘিরে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। এ জামাতে ইমামতি করবেন, কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

সবশেষ নামাজের সময় মুসুল্লিদের কাতার সোজা করার জন্য দাগ কাটাও শেষ পর্যায়ে। প্রতি বছর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাতের জন্য নেওয়া হয় ব্যপক প্রস্তুতি।

এবারও সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের কথা মাথায় রেখে। এ মাঠে ঈদের একটি মাত্র জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়েন দেশের বিভিন্ন জেলার মুসুল্লিরা।

ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামেজ উদ্দীন বলেন, ঈদগাহ পর্যবেক্ষণের জন্য ৬ টি ওয়াচ টাওয়ার, ৫০টি মেটাল ডিটেক্টর, ৮টি আর্চওয়ে গেইট, ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, ৭টি ড্রোন ক্যামেরা, ৪টি লাইভ ক্যামেরা ও

একটি কন্ট্রোল রুম মুসল্লিদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করবে। তিনটি আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে মেটাল ডিটেক্টরের তল্লাশির মাধ্যমে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করানো হবে।

ঈদগাহে মুসল্লিরা শুধু জায়নামাজ ও জরুরি প্রয়োজনে মুঠোফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে ছাতা, ব্যাগ ও অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। পুলিশ, র‍্যাব ,সেনাবাহিনী, বিজিবি, সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ চার স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে জেলা শহরসহ ঈদগাহ মাঠ।

র‍্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মো. আশরাফুল কবির বলেন, নিরাপত্তা জোরদার করতে পোশাকের পাশাপাশি সাদাপোশাকেও র‍্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। নাশকতাকারী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, পকেটমার, মলম পার্টিসহ অন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করব। ওয়াচ টাওয়ার থাকবে, এর মাধ্যমে আমরা সার্ভিলেন্স করব। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করব।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান বলেন, শোলাকিয়া ঈদের নামাজ আদায় করতে দেশ বিদেশ থেকে মুসুল্লিরা আসেন নামাজ আদায় করতে। তাদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।। দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

জানা যায়, ১৮২৮ সালে প্রথম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম সোয়ালাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় সোয়ালাখিয়া যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।

বাংলাফ্লো/এনআর

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0