বাংলাফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: ইরানের রাজবংশ দাবি করা যুবরাজ রেজা পাহলভি দেশটিতে বর্তমান রেজিমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আভাস দিয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের সাবেক এই যুবরাজ এমন পরিকল্পনার আভাস দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর ইরানিরা বর্তমান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবেন।
এ ক্ষেত্রে পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও অন্যান্য উপায়ে সহায়তা করবে। তবে এই বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট আর কিছু বলেননি।
রেজা পাহলভি বলেছেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বর্তমান রেজিমকে ক্ষমতাচ্যুত করলে মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এর মাধ্যমে তিনি ‘ইরানিদের’ বোঝাতে চেয়েছেন যে, এমন একটি ফলাফল তাঁদের স্বার্থেও অনুকূল। এটি কেবল কথার কথা নয়—এটি বোঝাতে তিনি দাবি করেন, ইরানের ক্ষমতাসীনদের ভেতরের কিছু ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
অনেক পশ্চিমা রাজনীতিবিদ ও যাঁরা ইরানকে আন্তর্জাতিক হুমকি মনে করেন, তাঁদের কাছে এই বার্তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যাঁরা মনে করেন—ইসরায়েল একটি সার্বভৌম দেশের ওপর বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে (সরকার যতই অপ্রিয় হোক না কেন), তাঁদের কাছে এই বার্তা হয়তো ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে রেজা পাহলভি যুক্তি দেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের নিজস্ব কর্মকাণ্ডই তাঁদের এই অবস্থানে এনেছে। তিনি বিশ্বাস করেন না যে, ইসরায়েলের উদ্দেশ্য বেসামরিক নাগরিক হত্যা করা।
পাহলভির স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কি ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অনুকূল
ইরানিরা যে দেশটির বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত—এমন কোনো ইঙ্গিত এখনো দেখা যায়নি। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলার সময় এখনো আসেনি। কিছু মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের জোরালো অনুভূতি দেখা গেছে। আবার অনেকেই ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে বিদেশে সংঘাতে জড়ানো, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা এবং তাদের স্বার্থের পরিপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করার জন্য দায়ী করেছেন।
পাহলভি বলেছেন যে, সাধারণ ইরানিরা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চান না। যদি কোনো বিদ্রোহ ঘটে, তবে পাহলভি নিজেকে এমন এক নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চান, যিনি ইরানের ক্রান্তিকালীন সময়ে নেতৃত্ব দিতে পারেন।
তিনি ইরানিদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করছেন বলে ধারণা করছেন এবং আন্তর্জাতিকভাবেও তাঁর পরিচিতি আছে। তবে তিনি দেশের ভেতরে ও বাইরে ইরানের বিভিন্ন বিরোধী আন্দোলনের একমাত্র অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বিবেচিত নন। জনসমর্থন বাড়াতে তিনি বলেছেন, যেকোনো ভবিষ্যৎ সরকারের রূপ জনগণই নির্ধারণ করবে।
কিন্তু তাঁর সব কথাই একটি গণ-অভ্যুত্থানের ওপর নির্ভরশীল, যা এখনো ঘটেনি। ইরানে প্রবেশাধিকারের অভাবে সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন। এ ছাড়া সাধারণ ইরানিরা কি নেতানিয়াহু ও পাহলভি উভয়ের কথামতোই দেখবে—এটিই এখন মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0