স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: সৌদি আরব সফরের সময় রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশে দেখা গেল এক চেনা মুখ—বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইনফান্তিনোর দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা নতুন কিছু নয়, তবে এবার তারা একসঙ্গে যোগ দিলেন উপসাগরীয় রাষ্ট্র সফরে।
আগামী ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। সেই আসরের দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রতীকী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে কাতারে, যেখানে উপস্থিত থাকবেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও ইনফান্তিনো নিজে। অনুষ্ঠানটিতে ট্রাম্পের হাতে পরবর্তী বিশ্বকাপের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই আয়োজনে মেক্সিকো ও কানাডার কোনো প্রতিনিধিই থাকছেন না। এই অনুপস্থিতি নিয়ে ওয়াশিংটনে আগেই রসিকতা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, “ফিফা সভাপতি ঠিকই বুঝেছেন কারা প্রকৃত আয়োজক। ”
ফিফার সদস্যরা বেশ অবাক হয়েছেন ইনফান্তিনোর এই সফরে, কারণ এই সময়েই ফিফার বার্ষিক কংগ্রেস হওয়ার কথা ছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ প্যারাগুয়েতে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস ভার্চুয়ালি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ইনফান্তিনোর উপসাগর সফরের সুবিধার্থে।
ফিফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ফিফা সভাপতি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে বিশ্বকাপ নিয়েও আলোচনা হবে। ”
জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ২০১৬ সালে দুর্নীতিতে জর্জরিত ফিফার দায়িত্ব নেওয়ার পর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও, তার সময়েও সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে গত বছর ফিফার নিয়ম পরিবর্তনের ফলে সৌদি আরবকে ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের পথ করে দেওয়ার পর সমালোচনার ঝড় ওঠে। সৌদি আরব ফিফার বড় আর্থিক পৃষ্ঠপোষকও বটে।
ট্রাম্প ও ইনফান্তিনোর সম্পর্ক বহুদিনের। ২০২০ সালে দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ট্রাম্পের আয়োজিত এক ডিনারে ইনফান্তিনো ছিলেন ‘ওয়ার্ম-আপ অ্যাক্ট’। একই বছর ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সময় তিনি দুবাইয়ে উপস্থিত ছিলেন, যা ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের মধ্যস্থতায় সম্পন্ন হয়েছিল।
২০২৪ সালে ইনফান্তিনো ইভাঙ্কা ট্রাম্পকে একটি নতুন ক্লাব টুর্নামেন্ট, ক্লাব বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান। এ বছরই সেই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে।
এমনকি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ অনুষ্ঠানে মঞ্চেও ছিলেন ইনফান্তিনো। ক্লাব বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটি সাময়িকভাবে রাখা হয়েছে হোয়াইট হাউজে, প্রেসিডেন্টের টেবিল ‘রিজলুট ডেস্ক’-এর পাশে।
এই সম্পর্ক ক্রমেই বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে আরও প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে—বিশ্বকাপ কি কূটনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠছে?
তথ্যসূত্র- দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
বাংলাফ্লো/এসও
Comments 0