বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ খাতের প্রধান উপকরণ রড ও সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক-করের কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এতে রড ও সিমেন্ট দুই পণ্যের দামই বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা।
নতুন শুল্ক কাঠামোয় টনপ্রতি রড উৎপাদনে খরচ বাড়বে ৯০০ টাকা এবং সিমেন্ট উৎপাদনে বাড়তি ব্যয় হবে অন্তত ৪০০ টাকা। ব্যবসায়ীদের মতে, এর সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ নির্মাণকারীদের ওপর।
সিমেন্ট: ক্লিংকারে বাড়তি ব্যয়, দাম বাড়বে বস্তাপ্রতি
সিমেন্ট উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে আগে নির্ধারিত শুল্ক ছিল প্রতি টনে ৭০০ টাকা। নতুন বাজেটে এটি বাদ দিয়ে এখন থেকে মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা হারে শুল্ক আদায়ের বিধান করা হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় শুল্কহার নির্ধারিত হয়েছে ২৫ শতাংশ। তবে যাদের নিজস্ব কারখানা রয়েছে, তাদের জন্য এ হার ১৫ শতাংশ রাখা হয়েছে।
সিমেন্ট খাতের একজন উদ্যোক্তা জানান, নতুন হারে শুল্ক বসানোর ফলে ক্লিংকার আমদানিতে প্রতি টনে গড়ে ৪৩৭ টাকা খরচ বাড়বে। এর ফলে বাজারে সিমেন্টের দাম বস্তাপ্রতি ৯-১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে।
গত বছর দেশে প্রায় ২ কোটি টন ক্লিংকার আমদানি হয়েছিল। নতুন শুল্ক কাঠামোর ফলে সরকার এই খাত থেকে অতিরিক্ত ৮০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পেতে পারে। তবে দিন শেষে এই বাড়তি ব্যয়ের বোঝা গড়িয়ে যাবে ভোক্তাদের ঘাড়েই।
রড: কাঁচামাল আমদানিতে বাড়তি কর, উৎপাদনেও ভ্যাট বৃদ্ধি
রড তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত পুরনো লোহার টুকরা, স্পঞ্জ আয়রন ও পিগ আয়রন আমদানিতে নির্ধারিত কাস্টমস শুল্ক প্রত্যাহার করে নতুনভাবে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে। ফলে এখন পুরনো লোহার টুকরা আমদানিতে প্রতি টনে কর দাঁড়াবে ২ হাজার ৪০০ টাকা, যা আগে ছিল ২ হাজার টাকা। স্পঞ্জ ও পিগ আয়রনে শুল্ক বেড়েছে ৩০০ টাকা।
শুধু আমদানিই নয়, উৎপাদন পর্যায়েও শুল্ক-করের বোঝা বেড়েছে। আগে প্রতি টনে রড উৎপাদনে ভ্যাট ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা, যা বাড়িয়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা করা হয়েছে।
নির্মাণ ব্যয়ে সরাসরি প্রভাব
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রড ও সিমেন্ট—দুই উপকরণের দাম বাড়লে আবাসন ও অবকাঠামো নির্মাণ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি অনিবার্য। এতে প্রভাব পড়বে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির আবাসন সক্ষমতার ওপর, পাশাপাশি সরকারি নির্মাণ প্রকল্পেও বাজেট বাড়াতে হতে পারে।বাজেট
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0