Logo

চলনবিলের শতাধিক বিঘার ধান পানির নিচে ডুবে গেছে

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও তাড়াশ উপজেলার মাঠজুড়ে শতাধিক বিঘা জমির কাঁচা ও পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

ছবি: সংগৃহীত

জেলা প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ: চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন আগাম বন্যার পানিতে থই থই করছে। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও তাড়াশ উপজেলার মাঠজুড়ে শতাধিক বিঘা জমির কাঁচা ও পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান পানি, এই অবস্থায় কৃষকরা নৌকা, কলার ভেলা ও পলিথিনে তৈরি ভেলায় করে ধান কাটার চেষ্টা করছেন।

শাহজাদপুরের নিমাইগাড়া বিলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে হঠাৎ পানি বাড়ায় বিস্তীর্ণ ধানের খেত তলিয়ে গেছে। হুরাসাগর নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে প্রায় ১০০ হেক্টর জমির পাকা ও আধাপাকা ধান ডুবে যায়। কৃষকরা বহুদিন ধরেই বিলে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানালেও তাতে কোনো সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

কৃষক রাশেদুল ইসলাম আকাশ বলেন, আট বিঘা জমিতে ধান পেকে গিয়েছিল, কিন্তু ঈদের আগে হঠাৎ বন্যার পানি ঢুকে সব ধান তলিয়ে গেছে। একই এলাকার শফিক আলী বলেন, আমার কয়েক বিঘার ধান একেবারেই ডুবে গেছে। এখন সারা বছরের সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়বে। বেচাঁ বিক্রি তো পরের কথা।

শাহজাদপুর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন বলেন, আগাম বন্যার কারণে নিমাইপাড়া বিলের ধান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী বছর বিলে পানি প্রবেশ রোধে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বাঁধ নির্মাণ হলে এরকম সমস্যা থাকবে না।

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক শাওকত আলী বলেন, ব্রি-২৯ জাতের ধান পাকার আগেই পানিতে তলিয়ে গেছে। অর্ধেক জমির ধান কাটলেও বাকিগুলো এখনো পানির নিচে। মজুরি অনেক বেশি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ঈদের আগে ও পরে শ্রমিক পাওয়া খুব কঠিন। দিন দিন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন, ঈদের কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পানির ভেতর থেকে ধান কাটা তো কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ধান আনতে হচ্ছে নৌকায়। ক্ষতি তো হয়ে গেছেই, খরচ হচ্ছে আরও দ্বিগুণ।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলায় ৯৩ শতাংশ বোরো ধান ইতোমধ্যেই কাটা হয়ে গেছে। তবে আগাম বন্যার পানি বাড়ায় বিলের নিচু অঞ্চলে ধান কাটা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সব ধান কাটা শেষের দিকে।

বোরো ধান ছাড়াও যমুনা তীরবর্তী নিচু জমির কাউন ও তিলও পানিতে তলিয়ে গেছে, যা কৃষকদের জন্য বাড়তি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়েছে কৃষকদের।

সিরাজগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আহসান শহীদ সরকার বলেন, শাহজাদপুরে প্রায় ৬০ বিঘা জমির ধান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাড়াশ ও উল্লাপাড়ায় পানি তুলনামূলকভাবে কম থাকায় সেখানকার কৃষকরা পানিতে নেমেই ধান কাটার চেষ্টা করছেন। শ্রমিকের সংকট রয়েছে। তবে পানি কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমবে।

বাংলাফ্লো/এসকে

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0