Logo

যেভাবে মেসিকে ভুল প্রমাণ করলেন পিএসজির ভিতিনহা

২০২৩ সালের শুরুর দিকে ফরাসি মিডিয়ায় গুঞ্জন ছড়ায়, লিওনেল মেসি নাকি অনুশীলনে ভিতিনহাকে বলেছিলেন, “তুমি শুধু বাজেই না, আমাকে আঘাতও করছো। ”

ছবি: সংগৃহীত

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: একসময় তিনি ছিলেন প্রিমিয়ার লিগের এক অবহেলিত মুখ। উলভারহ্যাম্পটনে খেলতেন, সেটাও বদলি হিসেবে।

৭৭ নম্বর জার্সিতে ৭৭তম মিনিটে মাঠে নামতেন। নামটা মনে রাখার মতো ছিল না, খেলার প্রভাবও ছিল না।

কিন্তু আজ? ইউরোপের সেরা ক্লাব প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি)-র মাঝমাঠে তিনিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তার নিখুঁত পাস, ছন্দ বদলানো মুহূর্ত, ঠাণ্ডা মাথার নিয়ন্ত্রণ—এসবই মিলিয়ে ভিতিনহা এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার।

আর এই উত্থানের পেছনে আছে এক নীরব প্রতিশোধের গল্প।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে ফরাসি মিডিয়ায় গুঞ্জন ছড়ায়, লিওনেল মেসি নাকি অনুশীলনে ভিতিনহাকে বলেছিলেন, “তুমি শুধু বাজেই না, আমাকে আঘাতও করছো। ”

আরেক সংস্করণে ছিল, “দেখছো? এ কারণেই তুমি খারাপ!”

ভিতিনহা অবশ্য সেসব কথাকে গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবুও ততদিনে তার অবস্থানটা স্পষ্ট—তারকারা তাকে পছন্দ করছিলেন না, ক্লাবের ভেতরেও প্রশ্ন উঠছিল নতুন মিডফিল্ডারদের মান নিয়ে।

ক্লাব কর্তৃপক্ষ যখন পারেদেস, ড্রাক্সলারের মতো তারকাদের ছেড়ে ভিতিনহা-রুইজদের আনলো, তখন সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ভেতরের সূত্র বলছিল, “এটা ক্লাবের সবচেয়ে দুর্বল স্কোয়াড, নতুনদের মানেই নেই। ”

কিন্তু সেই ‘অবিশ্বাসের’ ভিতিনহাই আজ চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী দলের হৃৎপিণ্ড। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ফাইনালে তিনি যা করেছেন, তা শুধুই পরিসংখ্যান নয়—এ এক শৈল্পিক কর্তৃত্বের উদাহরণ।

প্রথম গোলের আগের পাসটি বদলে দেয় ম্যাচের গতি। দ্বিতীয়ার্ধে দুয়েকে দুর্দান্ত থ্রু পাস দিয়ে করান তৃতীয় গোল। পুরো ম্যাচে তার ৪৬টি মাঝারি পাসের ৪৪টিই সফল।

চ্যাম্পিয়নস লিগে সবচেয়ে বেশি পাস দেওয়া খেলোয়াড়ও তিনিই। শুধু পাস নয়, তিনিই ছিলেন সেই নীরব খুনী—শত্রুকে দমিয়ে রাখেন শুধু বলের নিয়ন্ত্রণ দিয়ে, গতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এই রূপান্তরের মূল কারিগর পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে। তিনি ভিতিনহাকে মিডফিল্ডের স্রষ্টায় রূপান্তর করেছেন—শুধু বল ঘুরিয়ে বেড়ানো খেলোয়াড় নয়, বরং ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তনকারী খেলোয়াড়।

তাকে দিয়েছেন স্বাধীনতা, আত্মবিশ্বাস—আর ভিতিনহা সেটা কাজে লাগিয়েছেন নিখুঁতভাবে।

ভিতিনহাকে উলভস নেয়নি, কারণ তারা বুঝতে পারেনি এমন এক খেলোয়াড়ের গুরুত্ব, যার হাত ধরে খেলা গড়ে ওঠে, ছন্দ তৈরি হয়। অথচ ইংল্যান্ডের কোনো দলের মাঝমাঠেই নেই এমন নিখাদ পাসিং টেকনিশিয়ান।

ভিতিনহার গল্প এখনও শেষ হয়নি। সামনে ক্লাব বিশ্বকাপ, যেখানে পিএসজি প্রথমবারের মতো বিশ্বজয় করতে পারে। আর ভিতিনহা হতে পারেন সেই জয়ের মুখ—যিনি মাঠেই প্রমাণ করে দিচ্ছেন, মেসি তখন ভুলই বলেছিলেন।

বাংলাফ্লো/এসও

Related Posts খেলা

Leave a Comment

Comments 0