স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: ফিফার নতুন সংস্করণের ক্লাব বিশ্বকাপ যেন শুধু মাঠের লড়াই নয়, বরং এক বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক মঞ্চ। গত মার্চে ফিফা ঘোষণা করে, এবারের ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত ক্লাব বিশ্বকাপে বিজয়ী দল পাবে সর্বোচ্চ ১২৫ মিলিয়ন ডলার—অর্থাৎ মাত্র এক মাসের টুর্নামেন্টে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত আয়ের সুযোগ!
শুধু ম্যাচ জিতলেই মিলবে ২ মিলিয়ন ডলার।
তবে আরও বড় কথা হলো—যুক্তরাষ্ট্রের মতো তুলনামূলক উন্মুক্ত মার্কেটে নিজেদের ব্র্যান্ড ছড়িয়ে দেওয়ার এই বিরল সুযোগকে কেউই হালকাভাবে নিচ্ছে না। ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলো এখানে আসছে শুধু ট্রফির জন্য নয়, বরং লাখ লাখ নতুন ভক্তের মন জয়ের জন্য।
অনেক স্টেডিয়ামে খালি আসন এবং ম্যাচের মান নিয়ে ইউরোপে কটাক্ষ হলেও ক্লাবগুলোর কাছে এটি এক বিশাল ব্র্যান্ড-বিল্ডিং মুহূর্ত।
প্যারিস সেন্ট জার্মেইর প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নাসের আল খেলাইফি বলছেন, 'ফিফার ক্লাব বিশ্বকাপ হবে একটি মাইলফলক। এতে সব ক্লাবেরই প্রকৃত লাভ হবে। '
অক্টাগনের ফুটবল বিভাগের প্রধান ফিল কার্লিং বলেন, 'এটা এখনকার ফুটবলে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ যুদ্ধ—আন্তর্জাতিক ভক্ত ধরে রাখা এবং তাদের অর্থে পরিণত করা। '
এই মুহূর্তে ফুটবলে ট্যালেন্ট মানে টাকা, টাকা মানে নজর, নজর মানে স্পনসর, স্পনসর মানেই ক্লাবের অর্থনৈতিক ক্ষমতা
চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো ঐতিহ্য না থাকলেও ক্লাব বিশ্বকাপে আমেরিকার মাটিতে নিজেদের দেখানোর এই সুযোগকে বড় ক্লাবগুলো হাতছাড়া করতে চায় না। জার্সি বিক্রি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার বাড়ানো আর ডিজিটাল সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে ক্লাবগুলো নিজেদের আয়ের নতুন দ্বার খুঁজে পাচ্ছে।
স্পোর্টস মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ টিম ক্রো বলেন, 'এটা এখন আর ঐতিহ্যগত ভক্তদের মন জয় করার প্রশ্ন নয়, বরং নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোই মূল লক্ষ্য। '
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শীর্ষ ২০ ক্লাব ২০২৩-২৪ মৌসুমে বাণিজ্যিক খাত থেকে মোট ৪.২ বিলিয়ন পাউন্ড আয় করেছে—যার মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের আয় সর্বোচ্চ ৪১০ মিলিয়ন পাউন্ড।
যুক্তরাষ্ট্রে এখনও লাখ লাখ মানুষ আছেন যাদের কোনো পছন্দের ফুটবল ক্লাব নেই। সেই বাজার দখলের এই সুবর্ণ সুযোগ মিস করতে চায় না রিয়াল মাদ্রিদের মতো ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো।
আসলে যুক্তরাষ্ট্র হলো ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমি। সেখানে একজন ফ্যান মানেই ভবিষ্যতের ক্রেতা, সাবস্ক্রাইবার এবং বিনিয়োগকারী।
কেউ জানে না আগামী ১০ বছরে এই টুর্নামেন্ট কোথায় দাঁড়াবে। তবে রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজি’র মতো ক্লাব যখন এতটা সিরিয়াস, তখন এটা শুধু 'গ্রীষ্মকালীন প্রীতি ম্যাচ' নয়, বরং ফুটবলের ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক রূপরেখার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0