বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে মোবাইল ফোনের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বৃদ্ধির ফলে শিগগিরই বাজারে মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এবার নতুন ব্র্যান্ডের পছন্দের মোবাইল ফোন ক্রয়ের ক্ষেত্রে আগ্রহীদের খরচ বাড়বে।
সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট বক্তৃতায় তিনি মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদক ও আমদানিকারকদের ওপর বিদ্যমান ভ্যাট হার ২.৫ শতাংশ করে বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।
বর্তমানে স্থানীয়ভাবে দুটি উপাদান কেসিং ও চার্জার তৈরি করা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভ্যাট হার ৫ শতাংশ, আর পুরোপুরি আমদানিকৃত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা প্রতিষ্ঠানের জন্য তা ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। নতুন বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী, এই হার বেড়ে যথাক্রমে সাড়ে ৭ শতাংশ ও ১০ শতাংশে উন্নীত হতে যাচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট শিল্পে ভ্যাট ফাঁকি রোধ এবং রাজস্ব আয়ে ভরসা বাড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত তিন বছর ধরে এ খাতে ভ্যাটের চাপ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে—যেখানে অতীতে এটি করমুক্ত ছিল।
এ বিষয়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের একটি সংগঠনের নেতা বলেন, ‘একদিকে মুদ্রার অবমূল্যায়ন, অন্যদিকে ভোক্তাশ্রেণির আয় কমে যাওয়া—এই বাস্তবতায় ভ্যাট বাড়ানো শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাজারে মোবাইল বিক্রি কমে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।’
অর্থনীতিবিদদের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার এই সময়ে প্রযুক্তিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত কর সাধারণ মানুষের ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণের সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও নিম্নআয়ের মানুষের প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রভাব পড়বে।
উল্লেখ্য, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা— যা চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এডিপি ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট।
এর আগে সোমবার (২ জুন) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার দফতরে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন শেষে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর বাজেট ডকুমেন্টস নিয়ে রামপুরার বিটিভি ভবনে যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে রেকর্ড করা হয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনা। যা বিকাল ৩টায় সম্প্রচার শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন।
বাংলাফ্লো/এনআর
Comments 0