Logo

'কাশ্মীরিদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে ভারতের নানা রাজ্য'

কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর সেখানে অস্থিরতা বিরাজ করছে, এর মধ্যে গত কয়েকদিনে ভারতের বিভিন্ন স্থানে কাশ্মীরিদের হেনস্তা, মারধর এমনকি হত্যার হুমকি দেওয়ার খবর সামনে এসেছে।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর সেখানে অস্থিরতা বিরাজ করছে, এর মধ্যে গত কয়েকদিনে ভারতের বিভিন্ন স্থানে কাশ্মীরিদের হেনস্তা, মারধর এমনকি হত্যার হুমকি দেওয়ার খবর সামনে এসেছে।

এ ধরনের হেনস্তা ও হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে মূলত কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে যারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পড়াশোনা করছেন। সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও কাশ্মীরিদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হচ্ছে। কাশ্মীরি ছাত্রদের একটি সর্বভারতীয় সংগঠন জানায়, হেনস্তার ভয়ে অনেক কাশ্মীরি শিক্ষার্থী গত কয়েকদিন ধরে ঘরবন্দি হয়ে আছেন। একই সঙ্গে মুসলিমবিরোধী ঘৃণাও ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক এবং গণমাধ্যমে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পহেলগাম হামলার পর থেকে কাশ্মীরি এবং মুসলিম-বিদ্বেষ ছড়ানোর পাশাপাশি প্রবলভাবে মৌখিক আক্রমণ করা হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ মানুষদেরও।

পহেলগামের হামলার জন্য ভারত সরকার পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলেছে, তাই ভারতের মানুষদের মধ্যেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানের পতাকাও পোড়ানো হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সামনে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ২৬টি পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়েছেন। আবার ত্রিপুরার আগরতলাতেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, রাস্তায় মানুষের চলাচলের পথে পাকিস্তানের পতাকা রেখে দেওয়া হচ্ছে যাতে তার ওপর দিয়েই মানুষ হাঁটতে পারেন।

নানাভাবে হেনস্তা ও হুমকি

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও দেখা গেছে, উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের এক ব্যক্তি যিনি নিজেকে হিন্দু নামধারী একটি সংগঠনের নেতা বলে দাবি করছেন এবং বলছেন যে কাশ্মীরিদের দেরাদুনের যেখানেই দেখা যাবে, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকজন কাশ্মীরি শিক্ষার্থীকে শহর ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন তিনি- এমন ভিডিও সামনে এসেছে। জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এ ধরনের প্রতিটি ঘটনারই খবর রাখছে বলে জানিয়েছে।

সংগঠনটির সর্বভারতীয় আহ্বায়ক নাসির খুয়েমি গনমাধ্যম কে বলছিলেন, দেরাদুনের ঘটনায় যাদের হুমকি দিতে দেখা গিয়েছিল, তাদের আটক করা হয়েছে বলে সেখানকার পুলিশ আমাকে আশ্বস্ত করেছে। তবুও ঘটনা তো ঘটেই চলেছে। এই আটক হওয়ার ঘটনাটা জানতে পারলে ছোটখাটো ওই সব সংগঠনগুলো সচেতন হবে কি না জানি না। তার কথায়, সারাদেশ থেকেই কাশ্মীরি ছাত্রছাত্রীরা হেনস্তা-হয়রানির শিকার হওয়ার কথা জানাচ্ছেন। তারা একটি বিশেষ হেল্পলাইনও খুলেছেন। তিনি বলেন, দেরাদুন, চণ্ডীগড়, প্রয়াগরাজের মতো বড় শহরসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত আটটি গুরুতর মারধর, হুমকি ও হেনস্তার ঘটনা হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য ঘটনার খবর আসছে সারাদেশ থেকে যেখানে আমাদের রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা হেনস্তা বা হুমকির শিকার হওয়ার কথা জানাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পহেলগামের হামলার পর এমনিতেই পরিস্থিতি খারাপ। তার ওপর কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের হয়রানির এসব ঘটনা প্রকাশ করলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে সরকারের একটা আশঙ্কা আছে। তাই একটা প্রশাসনিক চাপ আছে ঘটনাগুলো প্রকাশ না করার। আমরা চেষ্টা করছি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাদের মাধ্যমে যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। তিনি বলেন, আমি নিজে বেশ কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য পুলিশ মহানির্দেশকের সঙ্গে কথা বলেছি। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। আর আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বলেছি তারা যেন বেশি মুখ না খোলে, কোনো রাজনৈতিক কথাবার্তা বাইরে না বলে। বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকতেও পরামর্শ দিয়েছি।

বাংলাফ্লো/এসকে


Leave a Comment

Comments 0