বাংলা ফ্লো ডেস্ক
ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের নতুন করে আরোপিত অতিরিক্ত উচ্চ মাত্রার শুল্ক আপাতত কমানো বা স্থগিত করার পরিকল্পনা নেই।
তবে তিনি দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (৭ এপ্রিল) ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
শুল্ক স্থগিত করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমরা এমন কিছু ভাবছি না। আপাতত (শুল্ক স্থগিতের) কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।
অনেক দেশ এর মধ্যেই বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার বা স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন কূটনৈতিক পন্থায় যোগাযোগ করছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে; প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা স্বীকারও করেছেন, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন—এ ইস্যুতে তিনি অনমনীয়।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এমন অনেক, অনেক দেশ আছে যারা আমাদের সাথে বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা করতে আসছে এবং তারা ন্যায্য চুক্তি করবে, এবং কিছু ক্ষেত্রে, তারা প্রচুর শুল্ক দেবে। আমরা ন্যায্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে শুল্ক স্থগিত করবেন কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমরা এমন কিছু ভাবছি না। আপাতত (শুল্ক স্থগিতের) কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।
ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, কার্যত প্রতিটি দেশই আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, যার মধ্যে ইসরাইলও রয়েছে, যাদের পণ্যের ওপর ১৭ শতাংশ মার্কিন শুল্কারোপের সম্মুখীন।
তিনি বলেন, আমেরিকা হয়তো ইসরাইলের ওপর শুল্ক কমাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি সম্পূর্ণ নতুন বাণিজ্যের কথা বলছি। এটি হতেও পারে, নাও পারে। ভুলে যেয়েন না, আমরা ইসরাইলকে অনেক সাহায্য করি। আপনারা জানেন আমরা ইসরাইলকে বছরে চার বিলিয়ন ডলার দেই। এটা অনেক।
এ সময় নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আগের দিন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে করা বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, গতকাল আমি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমি তাকে মাত্র একটি কথা বলেছি যে মার্কিন পণ্যের জন্য জাপানকে উন্মুক্ত করতে হবে আপনাদের। কারণ বর্তমানে জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি রপ্তানির হার শূণ্যের কাছাকাছি অথচ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর লাখ লাখ গাড়ি রপ্তানি করে জাপান।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর নতুন বর্ধিত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করে বিশ্বজুড়ে রীতিমতো হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্ব অর্থনীতিতে ইতোমধ্যেই তার প্রভাব অনুভূত হওয়া শুরু হয়েছে।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে— এমন সব দেশের ওপর বর্ধিত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে মৌলিক বা বেসলাইন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ ১২টি দেশের ওপর, বাকি দেশগুলোর ওপর আরোপিত শুল্ক ১০ শতাংশের বেশি। সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ভিয়েতনামের ওপর— ৪৬ শতাংশ। বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ধার্য করা হয়েছে ৩৭ শতাংশ শুল্ক।
৫ এপ্রিল থেকে বেসলাইন শুল্ক সংগ্রহ শুরু হয়েছে। যেসব দেশের ওপর ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ধার্য করা হয়েছে, তা সংগ্রহ শুরু হবে ৯ এপ্রিল থেকে।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0