Logo

তীর্থযাত্রায় বাস দুর্ঘটনার শিকার, প্রাণ গেল কক্সবাজারের ননি বালা নাথের

৭৩ বছর বয়সী ননি বালা নাথের বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার ডুলাহাজরায়। আহত অবস্থায় তাকে ভুবনেশ্বরের ক্যাপিটাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।

মৃত ননি বালা নাথ (ইনসেটে) ও দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাস।

বাংলা ফ্লো প্রতিবেদক

ঢাকা: তীর্থ করতে গিয়ে ভারতের ভুবনেশ্বরে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলাদেশের কক্সবাজারের ননি বালা নাথ (৭৩)। দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ভুবনেশ্বরের ক্যাপিটাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে এই নারীর মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৬ এপ্রিল) তীর্থযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে ননি বালার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার ডুলাহাজরায়। স্বামী দয়াল হরি নাথ।

জানা গেছে, বাংলাদেশের শতাধিক পর্যটক গত ১৭ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে দুটি বাসে তীর্থ করার জন্য ভারতে যান। এর মধ্যে ১৭টি শিশুসহ ছিলেন বেশ কয়েকজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। অযোধ্যা, দ্বারকা ঘুরে এই পূণ্যার্থীরা জগন্নাথ দেবের দর্শনের জন্য পুরি যাচ্ছিলেন।

তবে বিধিবাম! পুরি পৌঁছানোর আগেই তাদের বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।


আরও পড়ুন- বাংলাদেশি তীর্থযাত্রী নিয়ে ভারতে বাস দুর্ঘটনা, নিহত ১


শনিবার (৫ এপ্রিল) মধ্যরাতে ভারতের ভুবনেশ্বর-পুরি জাতীয় সড়কের সিফাসংলগ্ন এলাকায় তীর্থযাত্রীদের বহন করা বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুর্ঘটনায় আহত ১৬ জনের মধ্যে তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় ভুবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে (এআইআইএমএস) পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তাদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পুরিতে।

দুর্ঘটনায় আহত একাধিক ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তারা বাংলাফ্লোকে জানান, দুটি দলে বিভক্ত হয়ে আলাদা দুটি বাসে পুরি যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

একজন তীর্থযাত্রী বলেন, আমরা যে বাসে ছিলাম, যাত্রা শুরুর পর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করছিল সেই বাসের চালক। একসময় প্রচণ্ড ঝাঁকুনি টের পাই। এরপর কীভাবে কী হয়ে গেল, তা আর কেউ বুঝে উঠতে পারিনি। একটা সময় মনে হলো, বাসটি সড়ক থেকে ছিটকে রাস্তার পাশের পড়ে গেছে। তখন আমরা সবাই চিৎকার করতে থাকি।

তীর্থযাত্রী কয়েকজন বলেন, বাসের যে যাত্রীরা একটু নিরাপদে ছিল তারা আগে এগিয়ে যান সাহায্যের জন্য। এরপর আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকে তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে যান। পরে অ্যাম্বুলেন্স ও দমকল বাহিনীর ইউনিটসহ জরুরি সেবার কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালান।

আরেকজন তীর্থযাত্রী বলেন, আমাদের সবার পাসপোর্ট ছিল একজনের কাছে। উনিও দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমাদের পুরি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পিপলি থানার ইনস্পেক্টর ইনচার্জ সৌমেন্দু শেখর ত্রিপাঠী হোয়াটসঅ্যাপে বাংলা ফ্লোকে জানান, রোববার ভোরের দিকে পিপলি থানা এলাকায় দুর্ঘটনায় ১৬ জন বাংলাদেশি তীর্থযাত্রী আহত হন। বাংলাদেশি নারী যাত্রী ননি বালা নাথ আহত অবস্থায় ভুবনেশ্বরের ক্যাপিটাল হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান।

ত্রিপাঠী আরও বলেন, গুরুতর আহত তিন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভুবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে পাঠানো হয়েছে। অন্য যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা ত্রিপাঠী। বলেন, সন্দেহ করা হচ্ছে, চালক শারীরিকভাবে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0