বাংলাফ্লো খুলনা প্রতিনিধি
ঢাকা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েটে) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে ক্যাম্পাসে গিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে পৌঁছান।এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।
উপদেষ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সামনে বসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণ ছাড়া অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন না বলেও উপদেষ্টাকে জানান।
কীভাবে ছয় দফা থেকে উপাচার্য পদত্যাগের এক দফা দাবি পরিণত হলো, সেই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা তুলে ধরেন ।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারফোন করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছিলেন।
আমরণ অনশনরত কর্মসূচির তৃতীয় দিনে শারীরিকভাবে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আজ কুয়েটে আসার কথা রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে গত সোমবার বিকেল ৪টা থেকে ৩২ জন ছাত্র আমরণ অনশন শুরু করেন, তাঁদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন ২৬ জন শিক্ষার্থী অনশনে আছেন।
গতকাল সন্ধ্যার দিকে তালা ভেঙে আবাসিক হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা। এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
এরপর ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন এবং ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোয় প্রবেশ করেন। ১৬ এপ্রিল দুপুরে মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয় এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন।
বাংলাফ্লো/এসএস
Comments 0